আকাশ যেভাবে দূরে চলে গেলো!

ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করতো এক সময় আকাশের সাথে মানুষের খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো। এখন যেরকম আকাশ অনেক উঁচুতে রয়েছে আগে অতোটা উঁচুতে ছিলো না। চাইলে আকাশ ছোঁয়া যেতো।

একদিন ম্রো গ্রামের কারবারির দুই মেয়ে ঢেঁকিতে ধান ভানছিলো। কিন্তু নতুন ওই ঢেঁকির কাঠ সঠিক মাপের ছিলো না। ফলে তারা যখনই ধান ভানতে শুরু করে তখনই আকাশের গায়ে আঘাত লাগতে শুরু করে। ফলে ব্যথা পেয়ে অভিমান করে আকাশ দূরে চলে যায়। সেই যে গেছে আর মানুষের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনি।

নিচের ছবিটি একটি ম্রো গ্রামের। ম্রো একজন কিশোরিও ধান ভানছিলো। তারা যে গ্রামে থাকে বলা হয়ে থাকে এই গ্রামটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু গ্রাম। পাসিং পাড়া নাম। আকাশ তাদের ছেড়ে দূরে চলে গেলেও মেঘ কিন্তু রয়েই গেছে এখানে। এই গ্রামে ১২ মাসই মেঘ থাকে…।

গ্রামের ভেতর ছোট ছোট দু’একটি চায়ের যে দোকান আছে মাঝে মাঝে তার ভেতর মেঘ ঢুকে পরে…। আপনি বসে চা খাচ্ছেন মেঘও এসে বসে পরেছে পাশে, এই দৃশ্যটি নিজেই ভেবে নিন। এই বিষয়ক বাকি কথা অন্য কোন লেখায় থাকবে।

আপাতত আকাশ যে চলে গেলো দূরে সেটা নিয়েই ভাবছি। ভাবতে ভাবতে মনে হলো ভালো বন্ধুরা দূরে গেলেও অনিষ্ট করে না। কারণ ম্রোরা মেঘকে আকাশের চর্বি হিসেবে মনে করতো। আর এই মেঘের মাধ্যমেই আকাশ ম্রোদের নানা উপকার করতো। আকাশ দূরে চলে গেলেও সেই মেঘকে ঠিকই রেখে গেছে…।

লেখক: সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা, বাংলাদেশ।