চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের পার্শ্ববর্তী বেদখল হয়ে যাওয়া ১৫টি পাহাড় রক্ষার দাবি জানিয়েছে পিপল’স ভয়েস নামক একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। ১৩ জুন, শনিবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। পাশাপাশি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ বায়েজিদ লিংক রোডের দুই পাশের বিশাল পাহাড় শ্রেণী রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ”করোনা মহামারীর এ দুর্দিনে বায়েজিদ লিংক রোডের দুই পাশে জঙ্গল সলিমপুর, সলিমপুর, জালালাবাদ, উত্তর পাহাড়তলি, আরেফিন নগর এলাকায় নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা। লকডাউন চলাকালে এপ্রিল এবং মে মাসে ওই এলাকায় ১৫টি পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে চার’শ স্থাপনা। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পাহাড় কেটে স্থাপনাগুরো নির্মাণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে সংগঠনটি।”
পিপল’স ভয়েসের অভিযোগ, ”সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড়ি জমি ব্যক্তি বিশেষ দখলে নিয়ে বিক্রিও করেছে। এ জমিগুলো যারা কিনেছে তারা অবকাঠামো নির্মাণ করছে। সলিমপুর ও ফৌজদারহাটে দুটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকার পরও পাহাড় কাটা থামাতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি।
”লিংক রোডটি নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই জালালাবাদ হাউজিং পাহাড়, বাস্তুহারা পাহাড়, কাঠাল বাগান পাহাড়, কৃষ্ণচূড়া পাহাড়সহ জঙ্গল সলিমপুর, সলিমপুর, উত্তর পাহাড়তলি ও জঙ্গল লতিফপুর এলাকার মোট ১৫টি পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। শর্ত ভঙ্গ করে পাহাড় কাটায় রাস্তা নির্মাণকারী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ওই এলাকা পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু দু’মাস না যেতেই নতুন করে চলছে পাহাড়,” অভিযোগ করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে পিপল’স ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান উল্লেখ করেন, ”ওসব এলাকার জীব বৈচিত্র্য পাহাড় নির্ভর। অবাধে পাহাড় কাটা চলতে থাকলে সেখানকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। পাশাপাশি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে ওঠা নতুন বসতিগুলো প্রাণহানীর আশঙ্কাও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধ্বসে চট্টগ্রামে ১২৭ জন নিহত হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর এ দিনটিকে ‘পাহাড় রক্ষা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে কর্মসূচি পালন করে আসছে পিপল’স ভয়েস।