ব্যাঙ সংরক্ষণে শিক্ষার্থীরা

ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের নানা আয়োজন।

প্রকৃতি ও কৃষকের অন্যতম বন্ধু প্রাণী ব্যাঙ। বিশ্বব্যাপী এই প্রজাতি সংরক্ষণে প্রতি ব্ছর ৩০ এপ্রিল পালন করা হয় বিশ্ব ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস। এবারের দিবসটি বাংলাদেশে ভিন্নভাবে পালন করেছে বেসরকারি সংস্থা ইসাবেলা ফাউন্ডেশন।

সংস্থাটির উদ্যোগে ২৩ মে মৌলভীবাজার জেলার, বড়লেখা উপজেলার মাধবকুণ্ড উচ্চ বিদ্যালয়, লক্ষ্মীছড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধবকুণ্ড পান পুঞ্জি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থী শপথ নেয় ব্যাঙ সংরক্ষণে।

সংস্থাটি জানায়, গেল ৩০ এপ্রিল ব্যাঙ দিবস পালন করার কথা থাকলেও, ঈদের ছুটির কারণে ২৩ মে পালন করা হয়। ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংস্থাটির বন্যপ্রাণী গবেষক সাবিত হাসান বলেন, ব্যাঙ বিষাক্ত পোকামাকড় খেয়ে কৃষির জমিকে রক্ষা করে। বাংলাদেশ থেকে ১৯৭০ থেকে প্রায় ১৯৮০ সাল পর্যন্ত বিদেশে প্রচুর ব্যাঙ পাচার করা হয়েছিল।

“বন উজাড়, রাস্তায় গাড়ি চাপা পড়া, বিনা কারণে হত্যা, খাবারের জন্য হত্যা ব্যাঙের প্রধান হুমকি। বাংলাদেশ থেকে অনেক ব্যাঙ হারিয়ে গেছে। আর যেগুলো টিকে আছে তাও এখন বিলুপ্তির পথে। সচেতনতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে “আমরা ব্যাঙ মারবো না এবং বড় ছোট সবাইকে ব্যাঙ সম্পর্কে সচেতন করব- এই শপথ করে শিক্ষার্থীরা,” যোগ করেন সাবিত হাসান।

রোড র‍্যালি, ব্যাঙ লাফ, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সংস্থাটি। প্রতিযোগিতার সময় শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরন করা হয় এবং বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করে ইসাবেলা ফাউন্ডেশন।

বড়লেখা উপজেলার ইউএনও খন্দকার মোদাচ্ছির আলী বলেন, “ব্যাঙ সংরক্ষণে ইসাবেলার এই কার্যক্রম ও জীব-বৈচিত্র রক্ষার এই উদ্যোগ এই স্থানীয় শিক্ষার্থী এবং বাসিন্দাদের ব্যাঙ ও এর জীবনচক্র সম্পর্কে জানতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে, পাশাপাশি অনেকেই এ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।”

দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন জানান, ব্যাঙসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন অধিদপ্তরের সহযোগিতা করে থাকে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

বিশ্বব্যাপী নানা কারণে কমছে ব্যাঙের প্রজাতি। উভচর প্রজাতির এই প্রাণীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখন বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে, ব্যাঙ সংরক্ষণের প্রত্যয়ে বিশ্বের অন্তত ৫৮টি দেশে পালন করা হয় ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস। প্রতি বছরের এপ্রিলের শেষ শনিবারে পালিত হয় দিবসটি।