গাছ নিধনের নয়া কৌশল!

এভাবেই গাছের গোড়া ছেঁটে চলছে নৈরাজ্য। ছবি: সংগৃহীত

গাছ নিধনে নয়া কৌশল নিয়েছে প্রকৃতি ভক্ষণকারীরা। নতুন এই পন্থার নাম ‘রিং। সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশ কিছু বনাঞ্চলে এই পদ্ধতিতে গাছ নিধনের অভিযোগ মিলছে। এই কৌশলে গাছের গোড়া ছেঁটে দিলেই কয়েক মাসের মধ্যে শুকিয়ে কাঠ হয় মূল্যবান গাছ। উদ্ভিদ গবেষকরা বলছেন,গোঁড়া ছেঁটে দিলে মূলত গাছের পুষ্টি গ্রহণের ক্ষমতা লোপ পায়, ফলে আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা যায় গাছ।

সম্প্রতি সিলেট অঞ্চলের মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে এমন ঘটনার প্রমাণ মিলেছে। স্থানীয়রা জানান, মূলত প্রাকৃতিকভাবে গাছ মেরে ফেলতে নতুন এই কৌশল, যেটিকে ‘রিং’ করা বলা হয়। এরপর গাছ শুকিয়ে মারা গেলে চলছে জমি দখল। আবার সেই জমিতে চলছে বাণিজ্যিক চাষও। এ অপকর্মে অবশ্য কতিপয় বন কর্মকর্তাও জড়িত। কারণ সরাসরি গাছ কাটলে মামলা হবে, তাই নয়া এ কৌশল।

লাঠিটিলা এলাকার ফরেস্ট ভিলেজারদের প্রধান আবদুর রাজ্জাক জানান,”গাছের আশপাশেই তো ফলের আবাদ করা যায়। তাহলে রিং করে গাছ মারার দরকার হবে কেন। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”

সরেজমিনে দেখা যায়, লালছড়া,রুপাছড়া ও চাম্পাটিলায় সেগুন, কড়ই, আওয়ালসহ নানা প্রজাতির ২০ থেকে ২৫টি গাছ গোড়া থেকে প্রায় এক ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ছাঁটানো। এ রকম চার থেকে পাঁচটি গাছ শুকিয়ে মরে গেছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, লাঠিটিলা বন রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া দরকার। অন্যথায় একসময় পুরো বনটিই লোকালয়ে পরিণত হয়ে যাবে।

লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের এ দুর্দশা থেকে মুক্ত করতে বন বিভাগকেই করণীয় নির্ধারণ করতে হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম বলেন, বসতি বৃদ্ধি হওয়াতে বন ছোট হচ্ছে। যা বনের জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। বনে বসবাসকারী মানুষের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।