বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় ১৬টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫০টি স্থাপনা ও বসতি জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে অপসারণ করা হয়েছে। ২৪ জুন, বুধবার এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উচ্ছেদে বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টিকারী চক্রের ১০ জনকে জেল দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
জানা গেছে, এদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানটি পরিচালনা করেন। এ সময় বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোডের দু’পাশে পরিচালিত অভিযানে ১৬টি পাহাড়ে প্রায় ৩৫০টি চরম ঝুঁকিপূর্ণ ঘর অপসারণ করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতিবছরই বৃষ্টির মৌসুমে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ বছর নবনির্মিত সিডিএ লিংক রোডের দু’ধারে করোনাভাইরাস দুর্যোগ পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল-মে মাসে পাহাড় কেটে ব্যক্তিগত ও সরকারি জমিতে (রেলওয়ের জমি, খাস জমি) প্রচুর নতুন ঘর গড়ে উঠে। যেগুলো চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।
অভিযানে বায়েজিদ প্রান্ত এবং সীতাকুণ্ড প্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের দুটি টিম ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে। প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পরিচালিত অভিযান দুপ্রান্ত থেকে শুরু হয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি এলাকায় এসে শেষ হয়। অভিযানে ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি উচ্ছেদের পাশাপাশি বিদ্যুতের ৩০টি মিটার জব্দ করা হয়। পাহাড়ের বিনা মালিকানার জমিতে কীভাবে বিদ্যুৎ মিটার সংযোগ দেয়া হলো এনিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত করা হবে।
শুরুতে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন অভিযানের পরিচালনাকারীরা। এমনকি উচ্ছেদ টিমে থাকা ভূমি অফিসের দুই কর্মীকে মারধর করে তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পরে সরকারি কাজে বাধা দেয়া এবং পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্বরত সরকারি সদস্যকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জড়িতদের সাত থেকে দশদিন করে জেল দেয়া হয়েছে।
অভিযানে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সীতাকুন্ড মিল্টন রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি), কাট্টলী সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি), আগ্রাবাদ সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাস শিকদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), চান্দগাও সার্কেল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনীক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), হাটহাজারী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফ হোসেন।