
বাতের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসকে প্রাথমিকভাবে বংশগত রোগ হিসেবে ধরা হলেও মূলত অস্থিসন্ধিতে ইউরিক অ্যাসিড জমা হয়ে এ ব্যথার উদ্রেক হয়। ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের অভাব, অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, কিডনির অসুখ ইত্যাদি কারণেও বাতের ব্যথা হতে পারে। এই রোগ নিরসনে অঙ্গসঞ্চালন ও ওষুধের পাশাপাশি সুষম প্রাকৃতিক খাবার খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যা আর্থ্রাইটিস বা বাত দূর করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নিই খাবারগুলো কী।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের কার্যকারিতার কথা কম বেশি সবার জানা আছে। তবে খাবারের এই উপাদানটি আর্থ্রাইটিসও প্রতিরোধ করে। সামুদ্রিক মাছ যেমন- স্যালমন, টুনা, মেকেরেল-এ প্রচুর পরিমানে রয়েছে ফ্যাটি এসিড। বিশেষ করে অস্টিওআর্থ্রাইটিস প্রতিরোধে খাবারগুলোর কার্যকর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। সয়াবীজ, ওয়ালনাট, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিম, বাদাম ইত্যাদিও ওমেগা-৩ এর ভাল উৎস।
প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবে হলুদ খুবই উপকারি। কারকিউমিন, এন্টিওক্সিডেন্ট, প্রদাহ প্রতিরোধী উপাদান থাকায় হলুদ কাজ করে আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধে।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল ও খাবার আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করে। যেমন- কমলা, আনারস, স্ট্রবেরি, টমেটো, ব্রকোলি, আমলকি, জাম্বুরার মত ফল ও সবজিগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। যা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ নিরাময়ে কার্যকর। বেগুনি ও লাল ফলগুলো উপকারি। এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলও প্রতিরোধ করে। ভাইরাস, প্রদাহ প্রতিরোধক এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরির মতো ফলগুলো ডায়েট তালিকায় রাখা যেতে পারে।
প্রোটিনযুক্ত ফাইবার হার্ট সুস্থ রাখে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার পাশাপাশি বিশেষ ধরনের আর্থ্রাইটিসের বিরুদ্ধে কাজ করে। যা রয়েছে- সয়া বীজ, লাল আটার রুটি, ওটমিল, লাল চালের ভাত, বাদাম ও বীজে।
গ্রিন-টি আর্থ্রাইটিসের নিরাময়ে কাজ করে। আর গ্রিন-টি ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে, পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে, অবসাদ দূর করতেও ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন ‘ডি’ আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করে। সূর্যালোক ভিটামিন ‘ডি’ এর সবচেয়ে ভাল উৎস হলেও বিকল্প হিসেবে কিছু খাবার এবং ওষুধও একই কাজ করবে। ব্রকোলিসহ অন্যান্য সবুজ শাক সবজি, কাঁচা বা অল্প সেদ্ধ বা ভাপে রান্না করে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য খাবারের সাথে চিনি এবং অতিরিক্ত চর্বি খাওয়া বাদ দিতে হবে। নিয়মিত শরীর চর্চা এবং সচেতনতাও আর্থ্রাইটিসের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখবে।