করোনার আঘাত আনারসে, চাষীরা বিপাকে!

বাংলাদেশের রাঙ্গামাটির আনারস বাজার। ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

জমি রাঙিয়ে ভরে উঠেসে আনারস। অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলনও বেশি। এই আনারসের টসটসে গন্ধে মৌ মৌ করছে হাট-বাজারগুলো। কিন্তু ফলনে চাষীদের কষ্ট তা যেন এবার জলে গেল! করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে চাষীরা।

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে আনারসের রাজধানীখ্যাত রাঙামাটিতে এবারের আনারস বেচাকেনার দৃশ্যপট পুরোপুরি ভিন্ন। প্রতিদিনই পাহাড়ি বাগান থেকে চাষীরা নৌকা করে হাট-বাজারে নিয়ে আসছেন আনারস। রাঙামাটি জেলা সদর বাজার আনারসসহ মৌসুমি ফলে ভরপুর থাকলেও ক্রেতা শুন্য। লকডাউনের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় এ অবস্থা দাবি বিক্রেতাদের। তাই ক্রেতার অপেক্ষায় বেশিরভাগ সময় অলস পর করেন চাষীরা।

চাষীরা জানান, রাঙ্গামাটির পাহাড়ি এলাকায় আনারসের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। উৎপাদিত আনারস বর্তমানে জেলা সদর, চট্টগ্রাম, ঢাকা, শরীতপুরসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে যায়। তবে এবার ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় চাহিদা থাকলেও পাঠানো যাচ্ছে না। তাই ন্যায্য দামও মিলছে না। অন্যদিকে সময়মত বিক্রি না হওয়ায় কিছু পেঁকে আর কিছু পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আনারস। এ অবস্থায় বাগানের খরচও তোলা সম্ভব হবে না বলে জানান চাষীরা।

চাষী আবুল হাসেম জানান, “সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমে দামে বেইচা দিতে হচ্ছে আনারস। আগে যেটি প্রতি পিস ১০ টাকায় বিক্রি করেছি এখন তা তিন টাকা। আর ১৫ টাকার আনারস বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায়। এবার বাগানে যা খরচ হইছে এর অর্ধেকও আয় করতে পারবো না।”

অনারস ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, করোনা ভাইরাসে বেচাকেনা খুব খারাপ। বিজুর বাজারেও বিক্রি হয়নি। এইবার লাভের চাইতে লোকসান বেশি গুণতে হবে। পাইকারী ব্যবসায়ী সান্তা চাকমা জানান, আগে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্য জেলায় আনারস পাঠাতাম। এবার তা সম্ভব হচ্ছে না। নষ্ট হয়ে যাবে তাই কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছি।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কান্তি চাকমা বলেন, এ বছর দুই হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় বেশি। কিন্তু বেচাবিক্রি কম হওয়াতে দাম পাচ্ছে না চাষীরা। এ পরিস্থিতিতে একসঙ্গে চাষ না করে ধীর পদ্ধতিতে চাষ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যাতে ক্ষতি কমানো যায়।

“বর্তমানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাঙামাটিতে কৃষকদের জন্য চার হাজার বিঘা জমিতে আউশ ধানে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। যদি কোন আনারস চাষী আউশ চাষ করতে চায় তাদেরও প্রণোদনার আওয়তায় আনা হবে,” যোগ করেন পবন কান্তি।