ভারতীয় সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের লেবুখালির ঘাটে যিনি প্রকাশ্যে প্রতিদিন বিকেলবেলা কচ্ছপ বিক্রি করেন তাঁকে আইনের ভাষায় অপরাধী বলা ছাড়া গতি নেই। কিন্তু যাঁদের কাছ থেকে পাওয়া টাকা তিনি গুনে নিচ্ছেন কচ্ছপ বিক্রি করে তিনিও আইনের ভাষায় সমান অপরাধী।
তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে, দুলদুলির পাড় থেকে আসা নৌকা থেকে চার বছরের শিশু পুত্রের হাত ধরে সাবধানে নেমে আসা দম্পতির চোখ চকচক করে ওঠে। আদুরে ভঙ্গীতে ঘাড় হেলিয়ে বধূটি স্বামীকে জানায় মৃদু স্বরে “কতদিন খাইনি”। শহুরে স্বামী নেমে পড়েন দর দস্তুরে। দর কমে না একটুও, তাতে অবশ্য দমে যান না দম্পতি।
শিশুটির বিস্ময়কর দৃষ্টির সামনে জ্যান্ত অবস্থায় প্লাস্টিক বন্দী হয়ে জীব বিদ্যার পরিভাষায় Indian Flapshell Turtle [ভারতীয় বন্যপ্রাণি (সুরক্ষা) আইন অনুযায়ী সিডিউল ১ (পার্ট ২) তালিকা ভুক্ত অর্থাৎ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে সংরক্ষিত] চলে যায় বনবিবি সেতু পেরিয়ে হাসনাবাদ, দমদম,নিউ গড়িয়া হয়ে রুচিশীল মডিউলার রান্নাঘরে। ‘শিক্ষা’ সবসময় ‘চেতনা’ আনে না। অপরাধী তাই থেকে যায়, অপরাধ পৌঁছে যায় পরের প্রজন্মে।
***প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য বেঙ্গল ডিসকাভার কর্তৃপক্ষ লেখকের মতামতের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।