চাঁদে ভারতের অভিযান: স্থগিত শেষ মুহুর্তেই!

ভারতের 'চন্দ্রযান-২'। ছবি: সংগৃহীত

রোববার শেষ রাতে ২টা ৫১ মিনিট ইতিহাস সৃষ্টি করে চাঁদের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবার কথা ছিল চন্দ্রযান-২ এর। কিন্তু সবকিছু স্থগিত করতে হলো শেষ মুহূর্তেই। এজন্য কারিগরি ক্রটির কথা জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-ইসরো।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, চন্দ্রযানের একটি রকেটে উড়ার নির্ধারিত সময়ের ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড আগেই ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানালেন, রকেট থেকে জ্বালানি লিক করছে।

তবে কখন উড়তে পারবে তা নিশ্চিত করেননি তারা। অথচ সারাদিন ভারতসহ বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয় ছিল এটিই।

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানায়, শুধু ওই রকেটির ওজনই ৬৪০ টন। এটির সঙ্গে চন্দ্রযানের ওজন আরো ৩ হাজার ৮০০ কিলোগ্রাম। সেই ওজন নিয়েই এটি মাটি থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছে দেয়ার কথা চন্দ্রযানটিকে।

ইসরোর বক্তব্য, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতো শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল রকেট ভারতের নেই। তাই পৃথিবীর চারপাশ ঘুরিয়ে চন্দ্রযানকে অল্প অল্প করে দূরে পাঠানো হবে।

নির্দিষ্ট দূরত্বে গেলেই তবেই ঢুকবে চাঁদের কক্ষপথে। এরপর ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে এটিকে চাঁদের দিকে ক্রমশ ঠেলে দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, পৃথিবীর চারপাশ ঘুরিয়ে দূরে ছুড়ে দেয়ার মতো প্রযুক্তির এই প্রয়োগ করা হয়েছিল মঙ্গলগ্রহে অভিযানেও। যা সফল হয় প্রথমবারেই। কম খরচে মহাকাশ পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে ইসরো আগে থেকেই প্রথম স্থানে।

সাবেক ইসরো প্রধান জি মাধবন নায়ার বলেন, এই জটিল প্রযুক্তি ভারতীয় বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে চন্দ্রযান-২ চাঁদের এমন জায়গায় নামবে, যেখানে আগে কোনও দেশের যান নামেনি।

৬ বা ৭ সেপ্টেম্বরের কোনও এক সময় চন্দ্রযানের ‘ল্যান্ডার’ বিক্রম নামবে দক্ষিণ মেরুর কাছে। চাঁদের ৭০° অক্ষাংশে। ‘মানজিনাস সি’ এবং ‘সিমপেলিয়াস এন’ নামে দু’টি গহ্বরের মাঝে একটু উঁচু জমিতে।

তিনি উল্লেখ করেন, ৫০ বছর আগে নিল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন চাঁদের নিরক্ষরেখার কাছে নেমেছিলেন। এরপর রাশিয়া ও চীনের ল্যান্ডার নেমেছে উত্তর মেরুর কাছে।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনও দেশ পৌঁছয়নি। ইসরোর বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, ওখানে সূর্যের আলো পৌঁছায়ই না। ফলে চাঁদের বিবর্তনের ইতিহাসের সূত্র সেখানেই মিলতে পারে। যে সূত্রই পাওয়া যাক না কেন, ভারতই প্রথম পাবে।