বাংলাদেশ ঘুরে গেল চার বুনো হাতি

ফাইল ছবি: বুনো হাতি।

বন্যপ্রাণীর নেই কোন সীমানা, নেই দেশ। ‍পুরো বিশ্ব প্রকৃতিই তাদের বিচরণক্ষেত্র। প্রকৃতিগতভাবে অঞ্চল ভেদে আছে কোন কোন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর পদচারণা। তবে এই বিশ্বমণ্ডলীতে মানুষ নিজেদের চলাচল করেছে সীমাবদ্ধ। গড়ে তুলেছে দেশ বা রাষ্ট্র। আর নিজ ভূখণ্ডকে নির্ধারণ করেছে সীমানারেখা। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু বুনো প্রাণীরা। তারা মানুষের তৈরি এসব ভূখণ্ডে বিচরণ করে অবাধেই। তেমনিভাবেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অঞ্চলে বসবাস করা প্রাণীরা কোন পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়াই ঘুরে বেড়ায়।

গতকাল ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের বারেকটিলা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে প্রবেশ করে চারটি বন্যহাতি। সারাদিন হাতিরা জঙ্গলে বিচরণ করলেও ১৮ নভেম্বর ভোর থেকে হাতিদের কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সংবাদকর্মী জাহাঙ্গির আলম ভূঁইয়া বেঙ্গল ডিসকাভার-কে জানান, গতকাল রাত দেড়টার দিকে যাদুকাটা নদী দিয়ে ওই চারটি হাতি এসে অবস্থান করেছিল বারেকটিলার জঙ্গলে। তবে এ পথটি বুনো হাতিদের পুরনো পথ। বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে শীত মৌসুমে পার্শ্ববর্তী দেশের পাহাড় থেকে হাতিগুলো এসে কিছুদিন অবস্থান করে। পরে তারা ফিরে যায়।

তিনি জানান, যাদুকাটা নদী পার করে আসা অতিথি হাতির আগমনে কিছু উৎসুক জনতা হাতি দেখতে টিলায় ভিড় করেছিলেন। আবার অন্যদিকে আশপাশের টিলায় বসবাসকারী মানুষেরা ছিলেন কিছুটা আতঙ্কিতও।

স্থানীয়রা জানান, বারেকটিলায় এসে আরশাদ ফকিরের আলু ক্ষেত্র ও সামছু মিয়ার ধানের জমির ফসল খায়। উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, সীমান্ত অতিক্রম করে আসা হাতিগুলো দ্বারা কোন মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

তাহেরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তলুকদার জানান, ভোর থেকে স্থানীয়রা হাতির কোন খোঁজ পায়নি। ধারণা করা হচ্ছে হাতিগুলো ফিরে গেছে ভারত অংশে। তবে কাঁটাতার ভাঙ্গা ছিল বলে খবর পেয়েছি।

এর আগে বুধবার বাদাঘাট পুলিশ ফাড়ির এস আই মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে বারেকটিলার জঙ্গলে তিনটি বড় ও একটি বাচ্চা হাতি বারেক টিলার জঙ্গলে অবস্থান করছিল। হাতিগুলোকে কেউ যেন বিরক্ত না করে এবং নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে পুলিশ ও বিজিবি বাসিন্দাদের পরামর্শ দেন।