প্রাণের মায়া নেই, অসুস্থ গরুর দুধ পেতেই এন্টিবায়োটিক!

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

গরু অসুস্থ বা মরণাপন্ন হলে খামারির লোকসান হবে, এ কারণে বাংলাদেশের খামারিরা গরুকে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে। সম্প্রতি গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে রোবাবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

প্রতিবেদনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এমন চিত্র যায় পাওয়া বলে উল্লেখ করা হয়। অন্যান্য অঞ্চল থেকে ওই এলাকাতে সবচে বেশি সংগ্রহ হয় দুধ। প্রতিদিন তিন লাখ লিটার দুধ উপজেলাটির বিভিন্ন খামার থেকে যায় মিল্টভিটাসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে।

শাহজাদপুর এবং বাঘাবাড়ির গরুর খামার ঘুরে বিবিসির প্রতিবেদক জানায়, কৃষকদের কাছেও বেশ পরিচিত এন্টিবায়োটিক ওষুধ। বিভিন্ন প্রকারের ওষুধটির নাম অনায়াসেই বলতে পারেন খামারিরা।

শাহজাদপুরের একটি গরু খামারের মালিক আবু সিদ্দিক বিবিসিকে জানান, “গরু অসুস্থ হলে এন্টিবায়োটিক ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। আমরা এন্টিবায়োটিক তখনই দেই, যখন দেখি গরুটা খুবই মরণাপন্ন হইয়া গেছে।

“একটা গরুর দাম দুই লাখ-আড়াই লাখ টাকা। সেইটা যদি মারা যায়, তাহলে তো খামারি শেষ হয়া যাবে,” বলেন আবু সিদ্দিক।

ফাইল ছবি: সংগৃহীত

বিবিসি জানায়, “বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন।উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যে গরুটি প্রতিদিন ২০ লিটার দুধ দেয়, সে গরুর দুধ বিক্রি যদি দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকলে একজন খামারি পনেরো দিনে ১২-১৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়। যা একজন দরিদ্র খামারি পক্ষে মেনে নেয়া অসম্ভব।”

প্রাণ কোম্পানির দুধ সংগ্রাহক রাকিবুল মাহমুদের বিবিসিকে জানান, “আমি যখন দুধ এখানে রিসিভ করি তখন অনেক সময় দেখা যায় দুধে মাই আসছে। মাই এক ধরণের রোগ। এটা গরুর ওলান দিয়ে বের হয়। কৃমির ট্যাবলেট দিলে দুধে মাই আসে। তখন আমি খামারিদের বলে দিই যে মাই আসা দুধ আমি রিসিভ করবো না।”

“তাৎক্ষনিক অ্যান্টিবায়োটিক ডোজ প্রয়োগ করে খামারিরা। এতে যে রোগ সারতে ১০-১৫দিন সময় লাগে, তা পরের দিন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়। ঐ এন্টিবায়োটিকটা যাবে কই? এভাবেই দুধে আসে,” উল্লেখ করেন মাহমুদ।

গবাদি পশুর চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, গরু রোগাক্রান্ত হলে যদি এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়, তবে সেই গরুর দুধ বাজারে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বিক্রি করা অনুচিত।