মদপানে লোকালয়ে হাতির হামলা!

ফাইল ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

খাবার বা চলাচলের পথ হারালে হাতির তান্ডপের খবর মিললেও মদপানের চাহিদা মেটাতে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতির পাল। রোববার এক সংবাদে এ তথ্য জানায় কলকাতা 24×7।

ঘটনার বিবরণে বলা হয়, গেলো বুধবার ভারতের আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটের জেলার মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের বোড়োপাড়ায় হানা দেয় হাতি। এ সময় ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে ঢুকে হাঁড়িয়া (স্থানীয় মদ) পান করে চলে যায় হাতিরা।

এরপর শুক্রবারও ওই একই বাড়িগুলোতে আবারো হামলা করে হাতি। সেইসঙ্গে ভাংচুর করে আরো কয়েকটি বাড়িতে। অবস্থায় এমন দাঁড়িয়েছে মদপানে শুধু রাতেই নয়, দিনেও হানা দিচ্ছে হাতি।

এতে জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এরপরেই টনক নড়ে বন বিভাগের। অনেকেই মনে করছেন, হাঁড়িয়ার গন্ধে মাতাল হয়ে বারবার এই হানা হাতিদের।

প্রসঙ্গত, হাঁড়িয়া হল ভাত থেকে তৈরি এক প্রকার বিয়ার জাতীয় মদ। যা ভারতের বিহার, ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়ে প্রস্তত করা হয়।

ছবি: সংগৃহীত

আদিবাসী এলাকায় হাঁড়িয়া পান করার প্রচলন রয়েছে। মূলত চা শ্রমিকসহ অনেকেই এটি পান করেন। বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলে এটি প্রস্তুত করে আদিবাসী গোষ্ঠি ওঁরাও এবং সাঁওতালরা।

বন ও হাতি বিশেষজ্ঞদের দাবি, বন্যহাতি বা পোষা হাতিদেরও মহুয়া বা হাঁড়িয়া নামক দেশি মদের গন্ধে ঘোর লাগে। তাই সেই টানে ছুটে আসে লোকালয়ে। যেভাবে পাকা ফল বা মরাই এবং মাঠে থাকা ধানের টানে আসে।

জানা গেছে, উত্তরবঙ্গে ডুয়ার্সের বনভূমি সংলগ্ন এলাকাতেও ঠিক একইভাবে হাতিরা হানা দেয় হাঁড়িয়ার টানে। তেমনি দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলের কিছু অংশ যেমন- বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায়ও মদের টানে প্রায়ই হানা দেয়।

সরকারি নিয়ম অনুসারে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে বনবিভাগ। আর বাড়িতে হাঁড়িয়া না রাখতে গ্রামবাসীদের অনুরোধ করেছে বন বিভাগ।