‘পাখির মত গান গাই, উড়ে যাই সুউচ্চ দিগন্তে‘

পরিযায়ী পাখির ছবি তুলেছেন লেখক।

৮ মে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস। ‘পাখির মত গান গাই, উড়ে যাই সুউচ্চ দিগন্তে‘- এই প্রতিপাদ্যে বিশ্বব্যাপী পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের তাগিদে এ বছর পালিত হয় দিবসটি। বিশেষ প্রয়োজনে ও বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে বা মাসে পাখিদের পরিযায়ন হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে অন্যতম গুরুত্ব বহন করে থাকে পাখির এই পরিযায়ন। বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সারাবছর পরিযায়ন হয় বৃক্ষচারী, ফলভুক ও মাংশাসী প্রজাতি পাখিদের।

বৃক্ষচারী পরিযায়ী পাখিরা কীট-পতঙ্গ ও শস্যের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। না হলে এক সময় দেখা যেত বিশ্বে কীট-পতঙ্গ বৃদ্ধি পেত। যা ফসলি জমির শস্য খেয়ে ফেলতো পোকারা। এবং এগুলো মানুষসহ অন্য প্রাণীদের জন্যও ক্ষতিকর।

একইসঙ্গে ফলভূক পরিযায়ী পাখিরা না থাকলে অনেক ফলজ গাছেরই বংশবিস্তার হবে না। ফলে হারিয়ে যাবে চিরসবুজ বন। তেমনি পরিযায়ী জলজ পাখিরা জলাশয়গুলোতে বিষ্ঠা ফেলে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে, যা জলজ মাছ, প্রাণী ও উদ্ভিদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

তবে পরিযায়ী পাখিরা এখন হুমকির মুখে। এর মূল কারণ গাছ উজাড়, পাখিদের খাদ্য সংকট ও বিচরণক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়া অন্যতম। নদীতে বা জলাশয়ে বা বিলে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে দূষিত হচ্ছে পানি। পানিতে জন্মানো জলজ উদ্ভিদ মারা যাওয়ায় পাখিদের খাবার সংকট তীব্র হচ্ছে। ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে পোকা জাতীয় খাদ্য সংকট হচ্ছে পাখিদের।

সংকট মোকাবেলা করে পাখি সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পরিযায়ী পাখির সুফল সম্পর্কে জানতে ও জানাতে হবে। নাহলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারাবে, যার প্রতিফলন মানুষকেই বয়ে বেড়াতে হবে। পরিবেশ ও প্রাণীদের রক্ষা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আসুন, প্রকৃতি ও প্রাণীদের রক্ষা করি। ভালো থাকুক প্রকৃতি, ভালো থাকুক বন্যপ্রাণীরা, ভালো থাকুক পাখিরা।

লেখক: বাংলাদেশের বন্যপ্রাণ বিষয়ক আলোকচিত্রী।