ঢাকার ও চট্টগ্রামের নদীগুলোকে দখল-দূষণমুক্ত করতে চূড়ান্ত করা হয়েছে দশ বছর মেয়াদি খসড়া মহাপরিকল্পনা। রোববার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিনটি বিষয় রয়েছে মহাপরিকল্পনায়। নদী দূষণ, দখল এবং নাব্যতা। ঢাকার নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, তুরাগ, বালু ও পুংলি নদী। এসব নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩৯টি খালকেও মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলাসমূহের শাখা নদী, খালগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণসহ বাস্তবিক ধারণা নিয়ে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প পর্যালোচনা করে প্রস্তুত করা হয় মহাপরিকল্পনা দুটি।
মন্ত্রী জানান, দশ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে ঢাকার আশপাশের নদীগুলো, সেইসঙ্গে ফিরিয়ে আনা হবে নাব্যতা। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদী নিয়েও চূড়ান্ত করা হয়েছে আরেকটি মহাপরিকল্পনাও। গত ১২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাপরিকল্পনা দুটি অনুমোদন করেছেন।
“মহাপরিকল্পনায় চিহ্নিত করা হয়েছে নদী দূষণের ৯টি কারণ। গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য যাতে নদীতে না ফেলা হয় এজন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নদী দখলমুক্ত করার কাজ,” বলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
জানানো হয়, মহাপরিকল্পনায় চার ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম (১ বছর), স্বল্পমেয়াদি (৩ বছর), মধ্যমেয়াদি (৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদি (১০ বছর)। এতে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব এবং কার্যাবলিও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর জন্য ২৪টি মূল কার্যক্রম এবং এর আওতায় ১৮০টি সহযোগী কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর জন্য ৪৫টি মূল কার্যক্রম এবং এর আওতায় ১৬৭টি সহযোগী কার্যক্রম চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী এবং ঢাকার নদীগুলো সংরক্ষণে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালককে (প্রশাসন) সদস্যসচিব করে গঠন করা হয় একটি কমিটি।
এরপর ২০১৭ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালককে (প্রশাসন) সদস্যসচিব করে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজন সমন্বয়ে সভা ও ওয়ার্কশপের মাধ্যমে অংশীজনের মতামত ও সুপারিশ পর্যালোচনাপূর্বক মহাপরিকল্পনা করা হয়।