চিড়িয়াখানার আরো সাত বাঘ-সিংহ করোনা আক্রান্ত!

ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকার ব্রনস চিড়িয়াখানার আরো চারটি বাঘ ও তিনটি সিংহের শরীরে নতুন করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ২২ এপ্রিল, বুধবার এক খবরে এ তথ্য জানায় ন্যাশানাল জিওগ্রাফি। এনিয়ে চিড়িয়াখানাটিতে বিড়াল প্রজাতির আটটি প্রাণীর দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেল।

খবরে বলা হয়, ন্যাশানাল জিওগ্রাফির অনুসন্ধানের পর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আরো বাঘ ও সিংহের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে।তিন সপ্তাহ আগে প্রাণীগুলো আক্রান্ত হয়েছে বলে বুধবার ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একই দিন আমেরিকার কৃষি বিভাগ জানায়, এপ্রিলে নিউইয়র্কে দু’টি বিড়ালের দেহেও করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এর আগে গেল ৫ এপ্রিল নিউইয়র্কের ব্রনস চিড়িয়াখানাটিতে নাদিয়া নামক বাঘের দেহে প্রথম কোভিড-১৯ ভাইরাস শনাক্ত হয়। বাঘ রক্ষণাবেক্ষণে থাকা এক কর্মী থেকে বাঘ সংক্রমিত হয়েছে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ওই সময় আরো কয়েকটি বাঘ ও সিংহের মধ্যেও উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।

ব্রনস চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, চার বছর বয়সী বাঘ নাদিয়ার শুকনা কাশি ছিল এবং ক্ষুধা কমে গিয়েছিল। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৬ মার্চ থেকে চিড়িয়াখানাটি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি প্রাণীরা যাতে করোনায় আক্রান্ত না হয় সেজন্যে বিভিন্ন দেশও বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

এছাড়া গত মার্চে হংকংয়ে পালিত দু’টি জার্মান শেপার্ড কুকুর ও বেলজিয়ামে একটি বিড়াল কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয় বলে জানায় ন্যাশানাল জিওগ্রাফী। প্রাণীবিদদের মতে, বিড়াল প্রজাতির প্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, মেছো বিড়াল, চিতা ও বনবিড়ালের মতো প্রাণীর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি।

চাইনিজ একাডেমি অব সাইন্সের বন্যপ্রাণী গবেষক নাসির উদ্দিন বলেন, “শ্বাসতন্ত্রের কোষে করোনা ভাইরাস প্রবেশের জন্য এনজিউটেন্সিনোজেন কনভার্টিং এনজাইম নামক এক ধরণের বিশেষ রিসেপ্টর দরকার হয়। বাঘ, সিংহ ও অন্যান্য বিড়াল গোত্রের প্রাণীর এনজিউটেন্সিনোজেন কনভার্টিং এনজাইম এবং মানুষের এনজিউটেন্সিনোজেন কনভার্টিং এনজাইমের গঠন ও কাজ প্রায় একই ধরনের। তাই মানুষ থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস সহজেই বিড়াল জাতীয় প্রাণীর দেহে যেতে পারে।”

তাঁর পরামর্শ, বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা এবং প্রাণীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে প্রাণীদের দেখাশোনা ও পরিচর্যার সাথে জড়িত সকলের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।