নদী দূষণে আমাদের ‘অবদান’ কত বিচিত্র হতে পারে, এই ‘ভদ্রমহিলা’ তার খণ্ডপ্রমাণ। তার দেহের বিভিন্ন অংশ, পোশাকের উপকরণ, সবই আমাদের নদী থেকে কুড়ানো।
মাসখানেক আগে ঢাকার ‘কলাকেন্দ্র’ গ্যালারিতে উদ্ভাবনী এই প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানকার চিত্র ও ভাস্কর্য সবই নদী থেকে কুড়ানো বর্জ্য দিয়ে তৈরি।
‘বর্জ্য নামতা’ নামে এই প্রদর্শনীর আয়োজক ছিল ‘দাগ আর্ট স্টেশন’। ঢাকার আগে প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে। সত্যিই দাগ কাটার মতো নয়? এ ধরনের মেধাবী উদ্যোগকে রিভারাইন পিপল সবসময়ই স্বাগত জানায় ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চায়।
এক্ষেত্রেও আমরা পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। এমন প্রদর্শনী, স্থানীয় বর্জ দিয়ে, দেশের অন্যান্য অংশেও হতে পারে।
বর্জ্য থেকে শিল্পের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি, এমনকি পুর্নচক্রায়নের মাধ্যমে বর্জ্যের আর্থিক মূল্য তৈরির উদ্যোগ প্রথম দেখেছিলাম নেদারল্যান্ডসে। তবে সেটা সাগরে ভেসে আসা বর্জ্য থেকে।
বর্জ্যটা যে কাজের উচ্ছিষ্ট, ঠিক সেই কাজেরই প্রতিনিধিত্বমূলক শিল্প বানিয়েছে তারা। মজার ব্যাপার, ওই বর্জের ভিড়ে বাংলাদেশের একটি ‘জনপ্রিয়’ ব্র্যান্ডও চোখে পড়েছিল, যার নাম পাবলিকলি না নেওয়াই সঙ্গত।
নর্থ সী তীরে বঙ্গোপসাগরের বর্জ্য দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশেও কি এমন উদ্যোগ হতে পারে না? ঢাকার এই প্রদর্শনী প্রমাণ করেছে, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সবসময়ই বৈশ্বিক। ভৌগোলিক সীমারেখায় আটকে রাখা যায় না। নদী সুরক্ষার আন্দোলনও ঠিক তাই।
লেখক: সাংবাদিক ও নদী বিষয়ক সংগঠক, বাংলাদেশ
***প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য বেঙ্গল ডিসকাভার কর্তৃপক্ষ লেখকের মতামতের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।