পাহাড়ের বুকের ভেতর আশ্চর্য এক জগৎ যেন। জঙ্গুলে একটি জায়গা, কোথাও বৃষ্টির মতো ঝিরঝির পানি ঝড়ে। দেড়শো মিটার দৈর্ঘ্যের প্রাকৃতিক গুহাটির একদিকে প্রবেশ করলে অন্যদিকে বের হওয়া যায়।
বলছি ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির প্রাকৃতিক মাওসমাই গুহার কথা। আলা-আঁধারে ঘেরা গুহাটির আঁকাবাঁকা পথ আকৃষ্ট করে ভ্রমণপিপাসুদের।
গুহার প্রবেশ মূল্য ২০ রুপি। ঘন গাছের আড়ালে থাকে গুহার মুখ। কিছুটা সিড়ি বেয়ে উঠলেই দেখা মেলে প্রবেশ মুখ। ভেতরে যেতেই মনে হলো, রোমাঞ্চকর এক জগৎ। মেঝে থেকে শুরু করে ছাদ পর্যন্ত পুরোটাই প্রাকৃতিক পাথরে সৃষ্টি।
ছাদ আর দেয়াল চুঁইয়ে অবিরাম গড়িয়ে পড়ে হিম শীতল পানি। এতে মেঝেতেও সারাক্ষণই থাকে গোঁড়ালি সমান পানি। গুহা জুড়ে থাকা পাথরগুলোও একেকটি যেন ভিন্ন আকৃতির।
গুহার ভেতরে কিছু জায়গা চওড়া, আবার কিছু জায়গা অপ্রশস্ত। সতর্ক না থাকলে পাথরের সাথে ধাক্কা খেতে হবে। কারণ গুহার পথটি খুবই ছোট পথ। কোথাও কোথাও পাথর বেয়ে একটু উপরে উঠে আবার নিচে নামতে হয়। গুহার ভেতর আলোর ব্যবস্থা আছে। কিন্তু প্রাকৃতিক আলো না থাকায় কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন।
প্রতিটা বাঁক পার হওয়ার সময় ভাবছিলাম বোধহয় এখানেই শেষছে গুহা। কিন্তু সামনে মিলছিলো আরেকটা বন্ধুর পথ। একদিকে দারুণ অ্যাডভেঞ্চার হচ্ছিল, আবার বেশ গা ছমছমও করছিল।
এক সময় গুহার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলাম। বাইরে আলোর আভাস দেখে মনে হচ্ছিলো এতো সুন্দর দিন এর আগে কখনো দেখিনি! পাথরের ফাঁক গলে গুহার ভেতরে আলো ঢুকেছে। সে যে কী সুন্দর দৃশ্য।
বছরে অসংখ্য মানুষ এই গুহাটি দেখতে আসে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে মানুষ গুহাটি দেখতে যেমন আসেন, তেমনি আসেন বিদেশিরাও। অনেকেই পরিবার ও সন্তানসহ উপভোগ করতে আসেন গুহাটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য।
লেখক: সাংবাদিক, বাংলাদেশ