
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আনোয়ারার পরৈকোড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের গঙ্গাঁচরণ দাশ গুপ্ত নামে এক ব্যক্তি ১৯১২ সালে নির্মাণ করেন সার্বজনীন শ্রী শ্রী জালাকুমারী বিগ্রহ মন্দির। মন্দিরের পাশে রয়েছে ২০০ বছরের পুরনো বিশাল বটগাছ। এ গাছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিদিন পূজো করেন। গেল ২৬ অক্টোবর সকালে দূর্গাপূজার দশমীর দিন হঠাৎই ভেঙ্গে পড়ে গাছটি। এরপর এতদিন ডালপালা কাটার কাজ শেষে গাছের শিকড় তুলতে গেলে দেখা মিলে ৫০টি ডিম। যা কৌতুহলী করে তুলেছে এলাকাবাসীকে।
শিকড়ের গোড়া থেকে উদ্ধার হওয়া ডিমগুলো নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে নানা গল্প। কারো দাবি, বিষাক্ত কোনো সাপ বটগাছে বাসা বেঁধেছিল, কারো দাবি এটি কোন বিশাল বড় সাপ! আবার অনেকে মন্দিরের আশেপাশে ওই সাপ দেখার দাবিও করছেন।
জালাকুমারী বিগ্রহ মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল জায়গা নিয়ে বটবৃক্ষটির অবস্থান। উচ্চতা ১০০ থেকে ১৫০ ফুট। এমন বটবৃক্ষ ওই এলাকায় একটিই। বটবৃক্ষের বয়স নিয়ে যতই মতবিরোধ থাকুক, পুরোনো এই বৃক্ষের কাছে গেলে যে কেউই অবাক হবেন। বিশাল জায়গা জুড়ে ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো গাছটি। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গাছের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের সাপ ও তক্ষকের বিচরণ ছিল। গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ায় এটি উপড়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তারা।

পরৈকোড়া নয়ন তাঁরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদীপ কান্তি মল্লিক বলেন, এ গাছটি ছোটকাল থেকে দেখছি এরকম। আমার পূর্ব পুরুষেরাও এরকম দেখেছে। গাছটি পড়ে যাওয়ায় কাটার উদ্যোগ নেন মন্দির পরিচালনা কমিটি। কাটা শেষে শিকড় তুলতে গিয়ে দেখেন সেখানে সাপের ডিম। তবে এগুলো কোন সাপের ডিম তা কেউ জানে না। ডিমগুলোর কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। বাকিগুলো মন্দিরের পাশে শাশ্মানে রয়েছে।
মন্দিরের পাশে দোকানী দেবাশীষ দে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের পাশে দোকান করে আসছি। গ্রামের মানুষ পূজা দিতে আসেন এ বৃক্ষের নিচে। আমি অনেক সময় রাতে বিশাল সাপ দেখেছে মন্দিরের আশপাশে ঘুরতে, তক্ষক দেখেছি এবং তাদের শব্দও শুনেছি। ডিমগুলো এখানে পাওয়ায় পর মানুষের মনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। জানি না এগুলো কিসের ডিম!
স্থানীয় রাজিব দাশ বলেন, শিকড়ের নিচে সাপের ডিম পাওয়ায় খবর শুনে ওইখানে যাই। ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করি। কিন্তু কোন প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বা বন বিভাগের কেউ খোঁজও করেনি।
বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ ডিমগুলোর ছবি দেখে বেঙ্গল ডিসকাভার-কে বলেন, এগুলো পাইথনের ডিম মনে হচ্ছে। তবে ডিমগুলোকে পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।