
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় যৌথভাবে প্রায় ১২ মিলিয়ন ইউরোর জলবায়ু তহবিল গঠন করেছে জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। বুধবার (১৫ই জানুয়ারি) ব্র্যাকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ১১ দশমিক ৭৩৫ মিলিয়ন ইউরো তহবিল নিয়ে শুরু হয়েছে ‘ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড’ নামের এই কার্যক্রম। বাংলাদেশে জলবায়ু সমস্যার কারণে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে বা উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীগুলোর দুর্যোগ মোকাবেলার সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সহায়তা তহবিল গঠন করা হয়েছে। তহবিলটির কার্যক্রমের কেন্দ্রে রয়েছে শহরাঞ্চলে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনসাধারণ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৯ সালের নভেম্বরে এই তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখন কার্যক্রম শুরু করা হবে। প্রথমে খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় জলবায়ু-ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সামর্থ্য বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালিত হবে। শহর এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ডের সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবে। তহবিলটির নির্দিষ্ট বরাদ্দের মধ্যে ব্র্যাকও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে।

সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, “আগামী পাঁচ বছর ব্র্যাকের কার্যক্রমের অন্যতম প্রধান এলাকা হবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা। এই তহবিল বাংলাদেশের জন্য একটি চমৎকার উদ্ভাবনী উদ্যোগ। এর মাধ্যমে টেকসই কার্যক্রম পরিচালনাসহ সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উপযুক্ত পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব হবে। ফলে জলবায়ু সংকট মোকাবেলার কার্যক্রমগুলো আরো বিস্তৃত হবে।”
কেএফডব্লিউ’র আঞ্চলিক পরিচালক অনির্বাণ কুণ্ডু বলেন, “ব্র্যাকের সঙ্গে এরকম একটি তহবিল গঠন করতে পেরে আমরা গর্বিত। এর মাধ্যমে শহর এলাকায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় দীর্ঘদিনের আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টি দূর হবে।”
রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজ জানান, স্বল্পোন্নত ও উদীয়মান দেশগুলোর ইতিবাচক পরিবর্তনে আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যেতে জার্মানি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
কমপ্রিহেনসিভ ডিজ্যাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (সিডিএমপি-২) ২০১৪’র তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ৭ জনের মধ্যে ১ জন ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুহারা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যা গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে দরিদ্র জনগণের জন্য জীবিকার সঙ্কট তৈরি করবে।