আমাজনের আগুন মোকাবেলায় লড়বে সেনাবাহিনী

ছবি: সংগৃহীত

আমাজন বনাঞ্চলের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চিরহরিৎ বনটির বিশাল এলাকা পুড়ে ছাই হওয়ার পর টনক নড়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষের। দুর্যোগটি মোকাবেলায় সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনেরো। ২৩ আগস্ট, শুক্রবার সেনাবাহিনীর আদেশ জারি করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি ।

বিবিসি জানায়, আদেশে আমাজনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি পরিচালনা করতে ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফার্নান্দো আজেভেদোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২৪ অগাস্ট থেকে একমাসের জন্য সেনা মোতায়নের সিন্ধান্ত হয়েছে।

তবে এই ঘোষণা ইউরোপীয় দেশগুলোর তীব্র চাপে বাধ্য হয়েই প্রেসিডেন্ট বোলসোনেরো এ পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ব্রাজিলের কার্যকর পদক্ষেপ দেখা না যাওয়াতে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো একটি বাণিজ্য চুক্তিতে স্থগিতের হুমকি দেয়। চুক্তিটিতে ব্রাজিল ছাড়াও রয়েছে আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে এবং প্যারাগুয়ে। দেশটি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) গো-মাংস আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি বিষয়ে করতেও অনুরোধ করে ফিনল্যান্ডও।

ছবি: সংগৃহীত

ইউ নেতাদের কড়া সমালোচনার পর ব্রাজিলের প্রেসিডিন্ট সুর নরম করে বোলসোনেরো বলেন, দাবানল শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অজুহাত হতে পারে না।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইনপে), চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই আমাজন বনাঞ্চলে রেকর্ড সংখ্যক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার কথা জানায়। স্যাটেলাইট চিত্রে গত বছর একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর ৮৫ শতাংশ বেশি আগুন লাগার চিত্র উঠে আসে।

যদিও শুষ্ক মৌসুমে আমাজনে এমনিতেও দাবানল হয়ে থাকে। তবে এবারের এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মানুষের হাত আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে বোলসোনেরোর নীতিই কাঠুরে ও চোরাকারবারিদের বন উজাড়ে উৎসাহ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবেশবাদীদের।

এদিকে ব্রাজিলের বিভিন্ন শহরে সরকারের আমাজন নীতি ও আগুন নেভাতে অনাগ্রহের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। বিভিন্ন দেশে ব্রাজিল দূতাবাসগুলোর বাইরেও দেখা গেছে প্রতিবাদ কর্মসূচি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আমাজনের আগুনকে ‘আন্তর্জাতিক সংকট’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন। শুক্রবার বোলসোনেরোর সঙ্গে ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও আমাজনের আগুন নেভাতে সহায়তা করার প্রস্তাব দেন।