বিচিত্র কালো বাঘ

ওড়িশার সিমিলিপাল জাতীয় পার্কে কালো বাঘ। ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো ভারতের ওড়িশার সিমিলিপাল জাতীয় পার্কে ক্যামেরাবন্দী হয়েছে কালো বাঘ। গেল ২৯ জুলাই ভারতের বন পরিষেবা কর্মকর্তা সুশান্ত নন্দার করা টুইট ভিডিওতে দেখা যায় বিচিত্র এ বাঘ।

১৫ সেকেণ্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায় একটি কালো বাঘটিকে গাছে আঁচড় দিচ্ছে। গবেষকদের মতে, এই আচরণ বাঘের টেরিটরি বা এলাকা নির্ধারণের একটি প্রক্রিয়া।

সুশান্ত নন্দা টুইটে লিখেন, “বিশ্ব বাঘ দিবসে বিরল মেলানিস্টিক বাঘের ক্লিপ শেয়ার করছি। কালো বাঘের একটি ব্যতিক্রম জিন আছে। টাইগার রিজার্ভে এ বাঘ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত।”

এতোদিন পৌরাণিক দর্শনে কালো বাঘের অস্থিত্ব উল্লেখ করা হতো। বাস্তবে শুধুমাত্র সিমিলিপাল পার্কে দেখা গেছে ডোরাকাটা কালো বাঘ। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ওই পার্কে দেখা যায় এমন বাঘ। যদিও পৃথিবীতে মাত্র ছয়টি কালো বাঘ আছে, জানান প্রাণিবিদেরা।

বাঘ কেন কালো?

মেলানিস্টিক বাঘ হবার কারণ মিউটেশন বা জীনগত পরিবর্তন। বেঙ্গল টাইগার উপপ্রজাতির এই বাঘগুলোর নির্দিষ্ট জীনে একক পরিবর্তনের কারণে কালো হয়। চিতাসহ অন্য বড় বিড়াল প্রজাতিতেও এই নির্দিষ্ট জীনে অভিন্ন রঙের পরিবর্তন ঘটে।

কালো বাঘ কোন নির্দিষ্ট প্রজাতি নয়। তবে বাঘের কমলা রঙের বৈকল্পিক। এরা কালো কিংবা ছদ্ম-মেলানিস্টিক বা মেলানিস্টিক বাঘ নামে পরিচিত। কারণ এই বাঘগুলো বড় কালো ডোরাকাটা নিয়ে জন্মায়। জীনগত তারতম্যের কারণে কমলা পটভূমিতে ডোরাকাটা কালো রঙের বিন্যাস বেশি ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্যই কালো দেখায় বাঘকে।

ব্যাঙ্গালোরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সাইন্স-এনসিবিএস’র পরিবেশবিদ ড. উমা রামকৃষ্ণাণ এবং তার ছাত্র বিনয় সাগরের গবেষণায় দেখা যায় – ডোরাকাটা বিন্যাসে রঙের পরিবর্তনের কারণে বন্য বিড়ালদের কালো দেখায়।

লেখক: প্রাণী চিকিৎসক ও কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ