বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে বালু তুলে পর্যটন করপোরেশনের কমপ্লেক্সের জমি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকির মুখে পড়ছে জীব-বৈচিত্র্য। এজন্য প্রশাসনের নজরদারির অভাবকেই দুষছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পর্যটন করপোরেশনের কমপ্লেক্স তৈরিতে জমি ভরাট করা হচ্ছে সাগর সৈকত থেকে তুলে আনা বালুতে। এতে পার্কি সমুদ্র সৈকতের পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, উপকূল রক্ষায় ১৯৯৩-৯৪ ও ২০০২ সালে পর্যায়ক্রমে পারকি ও আশপাশের এলাকার প্রায় ৮০ হেক্টর জায়গাতে ঝাউগাছ লাগায় বনবিভাগ। আর্কিটেকচারাল পদ্ধতিতে লাগানো গাছগুলো বড় হলে পরবর্তীতে পারকি পর্যটন এলাকা হিসাবে রূপ পায়। স্থানীয়দের কাছে ঝাউ বাগান হিসেবেও পরিচিতি পায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পর্যটন মন্ত্রণলায় পারকি সমুদ্র সৈকতকে আধুনিক বিচ ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় পর্যটন করপোরেশন তিন বছর মেয়াদি পারকি বিচে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। যেটির মেয়াদকাল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত হয়।
প্রকল্পটিতে রয়েছে ১৪টি বহুতল বিশিষ্ট আধুনিক কটেজ, একটি মানসম্মত বার, দুটি পিকনিক শেড, দুটি কিডস কর্নার জোন, আধুনিক রেস্তোরাঁ, কনভেনশন হল, চেঞ্জিং ক্লসেট এবং ওয়েটিং রুম। এছাড়া রয়েছে কার পার্কিং জোনও।
এদিকে ১৩ একর জায়গায় ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন কমপ্লেক্স তৈরি করছে পর্যটন করপোরেশন। তবে সৈকতের ৫০০-৬০০ মিটার এলাকার বালু তুলে নিচ্ছে বারশত ইউনিয়নের প্রভাবশালী একটি মহল। মূলত এই বালু পর্যটন কর্পোরেশনের ১৩.৩৬ একরের ওই জমি ভরাটে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এছাড়া বালু নিতে বাঁধও কাটা হয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই ইঞ্জিনচালিত একটি ড্রেজার দিয়ে নিয়মিত তোলা হচ্ছে সৈকতের বালু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকির মুখে পড়ছে সৈকত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, “কর্ণফুলী নদী থেকে বালু তুলে পর্যটন কমপ্লেক্সের জমি ভরাট করা হচ্ছে। তবে সৈকত এলাকা থেকে বালু তোলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”