বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হরিণ জবাইয়ের অভিযোগ!

বনবিটের পরিত্যাক্ত ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া জবাই করা মায়া হরিণ। ছবি: স্থানীয়দের থেকে সংগৃহীত

বাংলাদেশে বনবিভাগের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হরিণ জবাই করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার, ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর বনবিটের কর্মকর্তা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, “এদিন সকালে বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন বনবিটের পরিত্যাক্ত ঘরে একটি হরিণের চামড়া ছাড়াচ্ছেন বলে খবর পান কয়েকজন স্থানীয় যুবক। পরে কয়েকজন সাংবাদিকসহ তারা ঘটনাস্থলে গেলে বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন জবাই করা একটি হরিণ মাটি চাপা দিতে উদ্ধত হন। এ সময় বিট কর্মকর্তা তাদের বলেন, শামসুল আলম নামে এক ব্যক্তি পাহাড় থেকে হরিণটি শিকার করে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করেন তিনি। তাই চামড়া সংরক্ষণের জন্য জবাই করে চামড়া ছাড়ান তিনি।”

উপস্থিত সাংবাদিকরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়কে জানালে হরিণটি মাটি চাপা দিতে নিষেধ করেন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, “বিট কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কয়েকজন মিলে হরিণটি ধরে এনে জবাই করেন। ঘটনা জানাজানি হলে হরিণের চামড়া সংগ্রহ ও মাংস মাটি চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন বিট কর্মকর্তা।”

এদিকে বনবিভাগের বিট কার্যালয় থেকে জবাই করা ও চামড়া ছাড়ানো অবস্থায় মায়া হরিণটি উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান কুমিরা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার উত্তম কুমার দত্ত। তিনি বলেন, “পাহাড়ে শিকারিরা হরিণটি হত্যা করেছে। জবাই করা অবস্থায় হরিণটি উদ্ধার করেছে বিট কর্মকর্তা।”

তবে শুরুতে বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের নিজেই হরিণ জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর কথা বললেও পুলিশকে জবাই করা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। পরিত্যাক্ত ঘরটি থেকে আলামত হিসেবে কয়েকটি ছুরি, কলাপাতা এবং রক্ত পাওয়া যায়। দুপুরে সীতাকুণ্ডু থানার এসআই রফিক ও রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমার দত্তের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মাটিচাপা দেয়া হয় মায়া হরিণটিকে।

বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী বলেন, “পাহাড়ে হত্যা করা একটি মায়া হরিণ উদ্ধার করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে বিট কর্মকর্তা। লকডাউনের কারণে এই মুহুর্তে ময়নাতদন্ত করাও সম্ভব নয় বলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে হরিণটিকে।”