ফের বাংলাদেশে হাতির মৃত্যু, উঠেছে নানা প্রশ্ন!

লামায় মারা যাওয়া বন্যহাতির দেহ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। ১৩ জুন, শনিবার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি খালকুইল্যা পাড়াস্থ ফাঁসিয়াখালী ছড়াতে হাতিটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ নিয়ে গেল দুদিনে বাংলাদেশ দুটি হাতি মৃত্যুর ঘটনা দেখলো। আর গেল সাত মাসে লামা উপজেলায় মারা গেছে চারটি বন্যহাতি।

জানা গেছে, শনিবার সকালে ঝিরিতে একটি মৃত বন্যহাতি দেখে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আবদুর রহিম ও বনবিভাগে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে দুপুরে ডুলহাজারা সাফারী পার্কের ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও লামা বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা নূরে আলম হাফিজসহ একটি হাতির ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। মারা যাওয়া পুরুষ হাতিটির বয়স আনুমানিক ১২ বছর বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে হাতিটির মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি হত্যা এ বিষয়ে নিশ্চিত করতে বলতে পারেনি বনবিভাগ।

পারাপারের সময় কাঁটাতারের বেড়া কিংবা পাহাড় থেকে পড়ে আহত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা নূরে আলম হাফিজ। বন্যহাতির মৃত্যুতে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার বলেন, ”ময়নাতদন্তের জন্য হাতিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই হাতির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।”

এদিকে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বনবিভাগের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের সচিব-মন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রাণী সংরক্ষণকর্মী ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক সাংবাদিকরা।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রাণ-প্রকৃতি সাংবাদিক হোসেন সোহেল লিখেছেন, ”হাতি মরলেই মুখে কুলুপ দেয়…. অবশ্যই হাতি যদি বনবিভাগের হয়ে থাকে তবে তাদের পক্ষ থেকে যেকোন বক্তব্য থাকা যৌক্তিক। কিন্তু তা হয় না, তাদের কোন বক্তব্য থাকে না… দায়িত্ব সামাল দিতে না পারলে বনবিভাগের সিএফ পদের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তির (বন্যপ্রাণী সার্কেল) সেই জায়গা থেকে সরে যাওয়া উচিত… সচিব মন্রীর জবাবদিহিতা থাকা উচিত। সময় এখন পালাবদলের। অথর্ব মানুষ দিয়ে বনবিভাগ চলতে পারে না।”

অপর এক সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন লিখেন, ”কী অদ্ভুত কথা! কোন প্ল্যান করে হাতি মারা হচ্ছে নাতো? কোন চোরকারবারী? হাতির দাঁত?।”

এর আগে ১২ জুন, শুক্রবার কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা এলাকায় পাহাড় থেকে নেমে আসা একটি বন্যহাতি বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় ফেসবুকজুড়ে চলছিল সমালোচনা। এর পরদিনই আজ লামায় হাতির মৃত্যু এই সমালোচনাকে আরো তীব্র করেছে।