নির্মমভাবে ডলফিন হত্যা: নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থা

বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় থাকা ‘ইরাবতি ডলফিন’ হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে কবিরাজি তেল সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। শুক্রবার উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগর উপকূলে এ ঘটনার সঙ্গে এক কবিরাজ ও স্থানীয় জেলেরা জড়িত থাকার খবর মিলেছে।

এরপর শনিবার রাত ডলফিন হত্যার খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায় মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল এলাকায় যান। সেখানে ক্রেতার সন্ধানে গিয়ে পঁচা-গলা ডলফিনটি পেলেও কবিরাজ পালিয়ে যান। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র আইন, ২০১৭’ এর ৪১ ও ৪২ ধারা মোতাবেক নিয়মিত মামলা করার জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী প্রাণী সংরক্ষণকর্মী ও সচেতন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দাবি উঠে।

মেরে গাছে ঝুলিয়ে ডলফিন থেকে কবিরাজি ওষুধের তেল সংগ্রহ 

আইনে আছে- ডলফিন বা তিমি হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা করা। একই অপরাধ পুনরায় করলে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। আর এসব প্রাণীর দেহের কোনো অংশ সংগ্রহ, দখল বা কেনাবেচা বা পরিবহন করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা। একই অপরাধ পুনরায় করলে চার বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান আইনে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, গুলিয়াখালী সাগর উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের জালে ডলফিনটি ভেসে আসে। পরে এটিকে সাগর তীরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখে। এতে মাছটি মারা যায়। পরে এক কবিরাজি ওষুধ বিক্রেতা ডলফিন থেকে তেল তৈরির উদ্দেশ্যে কিনে ভাটেরখীল এলাকার নিয়ে যায়। জীবন্ত দুর্লভ প্রজাতির প্রাণীটি হত্যা করায় হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয়রাও।

ইউএনও বলেন, প্রথমে শুষুক মাছ বলে শোনা গেলেও এটি ইরাবতি প্রজাতির ডলফিন। এর ওজন অন্তত ৫ মণ। খোঁজ নিয়ে পঁচা অবস্থায় মাছটি জব্ধ করেছি। ডলফিনটি মাটিতে পুঁতে ফেলতে ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি।