এক-তৃতীয়াংশ ব্যাঙ সংকটাপূর্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকার জলাশয়ে ব্যাঙ।

পরিবেশ রক্ষায় ব্যাঙের ভূমিকা অপরিসীম। তবে বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যাঙ আজ সংকটাপূর্ণ অবস্থায়। এ কারণে ব্যাঙ রক্ষায় প্রতিবছর ২০ মার্চ পালন করা হয় বিশ্ব ব্যাঙ দিবস।

২০১৪ সাল থেকে পালিত হচ্ছে ব্যাঙ দিবস। তবে ঠিক কে বা কোন সংস্থা এই ব্যাঙ দিবস শুরু করেছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই। এই দিবস তৈরি করা হয়েছিল বিভিন্ন ব্যাঙের প্রজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য।

ব্যাঙ উভচর প্রাণী। জল ও স্থল উভয় ক্ষেত্রেই এদের অবাধ বিচরণ। ব্যাঙের উৎপত্তি প্রায় ২৫৬ মিলিয়ন বছর আগে। ব্যাঙ প্রজননের পুরো চক্র সম্পন্ন করতে এদের পানিতে থাকতে হয় আর পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এরা ডাঙায় চলে আসে।

পৃথিবীতে প্রায় ৬ হাজার ব্যাঙের প্রজাতি পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৪ হাজার ৮০০টি রেকর্ডকৃত ব্যাঙের প্রজাতি অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া সারা বিশ্বে পাওয়া গেছে। কিন্তু গত এক দশকে প্রায় ১৭০ প্রজাতির ব্যাঙ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
১৯৫০ সালে ব্যাঙের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন। ১২০টিরও বেশি প্রজাতি ১৯৮০ সাল থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কিছু ব্যাঙের বিলুপ্তির কারণ ছত্রাকজনিত রোগ, ব্যাপক হারে আবাসস্থান ধ্বংস, পরিবেশ দূষণ ও কৃষিক্ষেতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার এবং খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত হারে প্রকৃতি থেকে ব্যাঙ সংগ্রহ এবং মেরে ফেলা প্রভৃতিকে ব্যাঙ বিলুপ্ত হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

গত ৫০ বছরের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতিগত সংখ্যা ৬৩টি। কিন্তু আমাদের বন্যপ্রাণীবিষয়ক বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই সংখ্যাটি ১০০-র উপর। আর গত ১২ বছরে বাংলাদেশ মোট ২৪টি নতুন ব্যাঙের সন্ধান মিলেছে। যার মধ্যে ৯টি ব্যাঙ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর জন্যই নতুন। ২০১৫ সালে আইইউসিএন বাংলাদেশের মূল্যায়িত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৪৯ প্রজাতির উভচরের মধ্যে ৯ প্রজাতির ব্যাঙকে বিলুপ্তির ঝুঁকির লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।