দেশে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমটিবি ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল অলিম্পিয়াড ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের অডিটরিয়ামে জাতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকালে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। অলিম্পিয়াডের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশবিদ সোসাইটির (বিপিএস)। এতে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক লিমিটেড (এমটিবি)। এতে এ ছাড়া মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল- কনজারভেশন মিডিয়া বেঙ্গল ডিসকাভার, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ ও দ্য ডেইলি অবজারভার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার এমপি। সম্মানীয় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন খান, অলিম্পিয়াডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আখতার আসিফ প্রমুখ।সমাপণী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিপিএসের কার্যকরী সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম এ পরিবেশ অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরা আঞ্চলিক (বিশ্ববিদ্যালয়) পর্যায়ে উত্তীর্ণদের নিয়ে আজ চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠীত হয়। এতে প্রায় ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে বাংলাদেশে ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের শিক্ষার্থী শিফাত আয়শা প্রথম; বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রাহামনি খানম দ্বিতীয় এবং নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারহানা করিম তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার।
পরিবেশ উপমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশবিদ সোসাইটির এ উদ্যোগ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদেরকে পরিবেশের নানা ইস্যু সম্পর্কে জানা ও সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করবে। মানুষের বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে হলে পরিবশের ভূমিকা সবার আগে। পরিবেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকব। সেই জন্য পরিবেশ সচতেন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে পরিবার থেকে বাচ্চাদের পরিবেশ শিক্ষা ও জাতীয় ভাবে প্রাইমারি শিক্ষা থেকে পরিবেশ সচেতনতা মুলক পাঠদান কর্মসূচির উদ্যোগ নিতে হবে। যেনো শিশুর অন্তরে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনা সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জাতীয় পরিবেশ পদক ২০১৯ প্রাপ্ত ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, পরিবেশ বিজ্ঞান ও পরিবেশ অর্থনীতির বিভিন্ন বিষযের ওপর শিক্ষার্থীদের মনোযোগ দিতে হবে।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ করতে গেলে পরিবেশগত কিছু ক্ষতি হবে। তাই সকল পরিবেশবিদদের প্রতি আহ্বান করেন যে, এই ক্ষতি মোকাবিলা সবাই সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে সাথে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিসিএস ক্যাডারে পরিবেশ ক্যাডার রাখা এবং বাংলাদেশে বিশ্বমানের পরিবেশ গবেষণা সেন্টার গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশবিদ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আবু জোবায়ের বলেন, পরিবেশ বিষয়ক যে কোনো পলিসি তৈরি এবং জাতীয় নীতি নির্ধারণে পরিবেশবিদদের অন্ত্রর্ভুক্ত করার দাবি জানাই।
অলিম্পিয়াডের বিষয়বস্তু ছিল- বিশ্ব পরিবেশ দিবস (১৯৭২-২০২৩), রিও আর্থ সামিট, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা, বাংলাদেশ প্রচলিত পরিবেশ আইন ও নীতিমালা, নবায়নযোগ্য শক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, ব্লু ইকোনমি ও ক্লাইমেট স্মার্ট সিটি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশ, পানি, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ দূষণ-বায়ু, পানি, নদী, শব্দ, প্লাস্টিক; বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবেশগত হুমকি ও গৃহীত পদক্ষেপ।