
প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে উঠছে। নিত্যনতুন অসুখে মারা যাচ্ছে মানুষ। এসব ঘটনার জন্য দায়ী হলো প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক থেকে বাতাসে মিশে যাওয়া কার্বনের মত বিভিন্ন গ্যাস। যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ।
বছরে যুক্তরাজ্যেই প্রায় ৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়। যার ৯৫ ভাগই দেশটির বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ। মানুষ ও পশুপাখির মৃত্যু, বন্যা হচ্ছে এর প্রভাবেই।
সম্প্রতি পরিবেশদূষণ ঠেকাতে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্যে সরকার।
এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে সমস্যাগুলো আরো তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভয়াবহ এ সমস্যা থেকে যুক্তরাজ্যেসহ পুরো বিশ্বকে বাঁচাতে চলতি বছর একটি প্রকল্পের কথা জানিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
তিনি জানান, সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যেই যুক্তরাজ্যেকে সমগ্র বিশ্বের মাঝে এমন একটি দেশে পরিণত হবে যেখানে কার্বন জাতীয় বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয় না।
থেরেসা মে-এর এমন ঘোষণাকে সাধুবাদ জানায় বিশ্বের প্রথমসারির প্রতিষ্ঠানগুলো। প্লাস্টিকের পরিপূরক হতে পারে এমন পদার্থ আবিস্কারের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য সরকারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করার আশ্বাসও দিয়েছে তারা। যার সর্বমোট বিনিয়োগের পরিমাণ ১৪৯ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা)।
পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে সরকারও এই প্রকল্পে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৬০০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে।
“আমরা প্লাস্টিকের ভয়াবহতা পুরো বিশ্বজুড়ে দেখেছি। তাই আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরিতে দৃঢ় সংকল্প,” বলেন যুক্তরাজ্যের বিসনেস সেক্রেটারি জর্জ ডেভিড ক্লার্ক।
তিনি জানান, বিনিয়োগের অর্থ বিভিন্ন গবেষণা ও ব্যবসায়িক কৌশল বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হবে। যেন প্লাস্টিকের পরিপূরক তৈরি সম্ভব হয়। আর প্লাস্টিক ব্যবহার করা হলেও এতে উদ্ভিদ বা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যায় কিনা তা যাচাই করা হবে।
এ প্রকল্পটি ‘ইউকে রিসার্চ এন্ড বিসনেস’ এর ‘স্মার্ট সাসটেনেবল প্লাস্টিক প্যাকেজিং চ্যালেঞ্জের’ এর একটি অংশ।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক ওয়ালট বলেন, “সরকার সমস্যার সমাধানে দৃঢ় সংকল্প। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই প্লাষ্টিকের ব্যবহার অনেকাংশেই কমে আসবে।”
ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক বর্জনের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ ও বিদ্যুতচালিত যানবাহন চালুর পরিকল্পনাও শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিশ্বের পরিবেশবিদরাও। তারা আশা করছে, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সফলতা অর্জনে সমর্থ হবে যুক্তরাজ্য।