বন্যপ্রাণীর মুখোমুখি হলে যা করবেন

সুন্দরবনের কুমির। ছবি: আদনান আজাদ আসিফ, বন্যপ্রাণী গবেষক, বাংলাদেশ

জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথবা চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়ে হঠাৎ কোনো বন্যপ্রাণীর সামনে পড়ে গেলেন, কি করবেন! আর প্রাণীটি যদি হয় চিতা, সিংহ, ভালুক বা কুমির তাহলে তো কথাই নেই। হঠাৎ এমন বিপদে জীবন বাঁচাতে জেনে রাখুন কিছু কৌশল।

নেকড়ে বা সিংহ

এ জাতীয় প্রাণীরা মানুষকে সহজে আক্রমণ করে না। তবে নিতান্ত হুমকি মনে করলে আক্রমনমুখী হয়ে উঠে। এসব প্রানীর আক্রমনের মোকাবেলার কৌশলও প্রায় একই রকম। সরাসরি এদের চোখের দিকে না তাকিয়ে শব্দ করতে থাকুন, নির্দেশ দিন সরে যেতে।

বাংলাদেশের সাপ। ছবি: আদনান আজাদ আসিফ

হায়েনা, কুগার, কয়োট, জাগুয়ার

এ প্রাণীগুলো মানুষের বসতির আশেপাশে বাস করে। কখনো গৃহপালিত পোষ্যের উপর আক্রমন করে। এদের আক্রমন থেকে বাচতে অন্ধকারে একা বাইরে যাবেন না। মন্দভাগ্যে এরা সামনে পড়লেও ধীর পায়ে সরে আসুন। সরাসরি চোখের দিকে না তাকাবেন না। গায়ের কাপড় ও বস্তু দিয়ে নিজেকে বড় দেখাতে চেষ্টা করুন। গাছে চড়ার চিন্তা করলে তা বাদ দিন, কেননা এদের কিছু প্রজাতি গাছেও চড়তে পারে।

মা সিংহের সঙ্গে শাবক। ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

বুনো মহিষ ও বাইসন

এ জাতীয় প্রাণীর আক্রমণ থেকে বেচে ফেরা কষ্টকর। এরা দল বেঁধে চলার সময় আপনার গাড়ির হেড লাইট ও ইঞ্জিন বন্ধ রাখুন। সামনে পড়লেও ধীরে ধীরে সরে আসুন। তবে আক্রমণ করে বসলে নিজেকে বাঁচানোর জন্য নাক মুখ ঘাড় দু হাতে ঢেকে তার অত্যাচার সহ্য করে নিন। ভাগ্য ভাল থাকলে বেঁচে ফিরবেন।

কুমির ও এলিগেটর

এদের রাজ্য হচ্ছে পানি। তাই পানির অন্তত ২০/৩০ ফুট দূর দিয়ে চলুন। ভেজা স্থান এড়িয়ে যান।

ভালুক

অনেক এলাকায় ভালুক বাড়ির উঠোন বা আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। আর জঙ্গলে তো দেখা মিলবেই। আশপাশে বাচ্চা ভালুক থাকলেই বুঝবেন মা ভালুকও আছে। দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করুন। জঙ্গলে এ প্রাণীর দেখা পেলে স্থির থাকুন, ধীরে দূরে সরে আসুন। তিনের অধিক দল বেঁধে জঙ্গল ভ্রমণে যাওয়া উত্তম। তাবুতে খাবার রাখবেন না।

ছবি: সংগৃহীত

হাঙর

পানির নিচে হাঙরের মুখোমুখি হতে না চাইলে মাছ ধরা ট্রলার, মাছ শিকারি কোন পাখির এলাকা থেকে দূরে থাকুন। চকচকে গয়না পড়ে পানিতে নামবেন না। হাঙর দেখলেই নড়াচড়া বন্ধ করে দিন, গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করুন। সাধারণত হাঙর মানুষ শিকারে অভ্যস্ত নয়। তাই খুব বেশি বিপজ্জনক মনে না করলে সে আক্রমণ করবে না।

ক্ষতিকর সাপ, পোকামাকড় ও মাকড়শা

এক্ষেত্রে বন-জঙ্গলে গেলে এদের বাচ্চা ও আবাসস্থল এড়িয়ে চলুন। কৌতুহলী হয়ে কোন কিছুতে হাত দেবেন না। যেকোন হিংস্র প্রাণীদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন সাথে বাচ্চা থাকলে এরা কয়েকগুণ বেশি হিংস্রতা দেখায়। তাই এদের সঙ্গে সন্তান থাকলে ওই স্থান ত্যাগ করুন।