বাংলাদেশের কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা থেকে উদ্ধার হওয়া মেছো বিড়ালের তিনটি শাবককে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ১১ মে, সোমবার রাতে উপজেলাটির কান্দিরপাড় ইউনিয়নের চনগাঁও নোয়াপাড়া গ্রাম থেকে বনবিড়ালের ছানাগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
বনবিভাগ জানায়, জমিতে ধান কাটতে গিয়ে মেছো বিড়ালের তিনটি শাবক দেখতে পান ওই গ্রামের বাসিন্দা মাসুম খান। পরে স্থানীয় কয়েকজন মিলে জীবিত অবস্থায় শাবকগুলো সংগ্রহ করে। তবে খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে শাবকগুলোকে।
পুলিশকে মাসুম খান জানান, তার কাছে থাকা দুটি শাবক ছেড়ে দেন তিনি। তবে আরেকটি শাবক নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী এলাকার আরিফ নামে এক যুবক। পরে তার দেয়া তথ্য মতে তিনটি শাবক উদ্ধার হয়।
শুরুতে শাবকগুলো কোন প্রজাতির তা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। তবে শাবকগুলো মেছো বিড়ালের বলে নিশ্চিত করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা জানান, তিনটি শাবকই সুস্থ আছে। এক সময় এই মেছো বিড়াল দেশের প্রায় সব জায়গাতেই দেখা মিলতো। কিন্তু এখন বিলুপ্তপ্রায়। উদ্ধার হওয়া শাবকগুলো বনবিভাগের জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ।
কুমিল্লা বনবিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, উদ্ধার হওয়া শাবকগুলো বয়স আনুমানিক চার মাস। শিগগিরই চট্টগ্রামের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে।
মেছো বিড়ালের ইংরেজি নাম Fishing Cat, বৈজ্ঞানিক নাম Prionailurus viverrinus। মাঝারি আকারের বিড়ালগোত্রীয় স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণী মেছো বিড়াল। সাধারণত নদীর ধারে, পাহাড়ি ছড়া এবং জলাভূমিতে বিচরণ করে প্রাণীটি। গত কয়েক দশকে এই বিড়াল প্রজাতি বিলু্প্তির মুখে।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, কৃষিজমি বৃদ্ধিসহ আবাসস্থল ও জলাভূমি সংকুচিত হওয়াতে দিন দিন কমছে মেছো বিড়ালের সংখ্যা। তাই আইইউসিএন ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ [৩] এবং ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের তফসিলভুক্ত সংরক্ষিত প্রাণী।