পাঁচ বছরেই বিশ্বে গাধার সংখ্যা অর্ধেক হবে!

বিক্রির জন্য নেয়া হচ্ছে গাধা। ছবি: সংগৃহীত

চীনে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে বছরে হত্যা করা হচ্ছে কয়েক লাখ গাধা। অবস্থা এমন পর্যায়ে যে এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বে গাধার সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্যা গার্ডিয়ানের এক খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডানকি স্যাংচুয়ারির নতুন প্রতিবেদন উল্লেখ করে গার্ডিয়ান জানায়, চীনে কয়েক হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য মতে গাধার চামড়া দিয়ে এজিওয়াও কারখানার ওষুধ তৈরি হচ্ছে। মূলত জেলাটিনভিত্তিক চীনা ওষুধকে বলা হয় এজিওয়া। এই ওষুধ মানুষের রক্ত স্বল্পতা কমানো ও রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে। বছরে ওষুধটি তৈরিতে দরকার হয় ৪৮ লাখ গাধার চামড়া।

গার্ডিয়ান জানায়, প্রাণীর ওপর জীবিকা নির্ভরশীল সম্প্রাদায়ের কাছ থেকে গাধা চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ যাত্রাপথে গাধাগুলোকে কোনো খাবার দেয়া হয় না, এমনকি পানিও। এতে ২০ শতাংশ গাধা যাত্রাপথেই মারা যায়। আর গাড়ি থেকে নামানো হয় কান বা লেজ টেনে। এতে প্রাণীটির পা ও খুর ভেঙে যেতে দেখা যায়।

ডানকি স্যাংচুয়ারির গবেষণা বিষয়ক পরিচালক ফেইথ বারডেন বলেন, যখন বাণিজ্যের জন্য গাধাকে হত্যা করা হয়, তখন প্রাণী অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভয়াবহ। আমরা আগে যেমনটা জানতাম, ঘটনা এরচেয়েও মারাত্মক। তিনি দাবি করেন, বিশ্বব্যাপী গাধার চাহিদা এতই বেশি যে মাদি কিংবা শাবক গাধাও চামড়া ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। অসুস্থ বা আহত গাধাকেও জবাই করার জন্য কসাইখানায় জড়ো করা হয়।

বর্তমান বিশ্বে চার কোটি চল্লিশ লাখ গাধা রয়েছে। ইতিমধ্যে ২০০৭ সাল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ২৮ শতাংশ, বতসোয়ানায় ৩৭ শতাংশ ও কাজাগিস্তানে ৫৩ শতাংশ গাধা কমে গেছে। ১৯৯২ সাল থেকে চীনে গাধার সংখ্যা ৭৬ শতাংশ কমে গেছে। এতে চাহিদা পূরণে বিভিন্ন দেশ থেকে গাধা আমদানি করতে হচ্ছে চীনকে। এছাড়া কেনিয়া এবং ঘানায় চামড়া ব্যবসায়ীরা নির্বিচারে গাধা হত্যা করায় প্রাণীটির সংখ্যা আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রাণীবিদরা।