শিল্পাঞ্চলের লেকে পাখির অভয়াশ্রম!

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আনোয়রায় কেইপিজেড এলাকার লেকে পরিযায়ী পাখি। ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

চারপাশ সবুজে ঘেরা নয়নাভিরাম সড়ক, আছে ফলের বাগনসহ বেশ কয়েকটি কৃত্রিম লেক। লেকে ফুটে থাকা পদ্ম আর পাখিদের জলকেলির দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে দেয়। এমন দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি কোন শিল্প এলাকা। বলছি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে প্রবাহিত কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত কোরিয়ান কেইপিজেড এর এলাকায় অবস্থিত জলাশয়গুলোর কথা।

পাহাড়ের বুকে লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ। নানা বর্ণের ছোট-বড় দেশিয় পরিযায়ী পাখি। সব মিলিয়ে কেইপিজেডে লেক পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। ইপিজেডের সড়ক দিয়ে যেতেই দেখা মিলবে এসব পাখি। হাজার-হাজার মাইল পথ উড়ে বছরের এ সময়টাতে এই এলাকায় আসছে পাখিরা।

কিছু পাখি দুই-আড়াই মাস পর চলে যায়, কিছু স্থায়ীভাবে থেকে যায়। পাখির ঝাঁকে বেশি দেখা যায় পানকৌড়ি। আর কচুরিপানার ফাঁকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিচরণ করে বেগুনি কালেমও।

“আমাদের দেশে প্রতিবছর শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। এরা সাধারণত নিরিবিলি এলাকা বেছে নেয়,” বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ ড. মনজুরুল কিবরিয়া।

তবে তিনি বলেন, ইদানিং পাখি আসার হার আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। নানা কারণে এটা হতে পারে। এর দুটি কারণ, যেসব এলাকায় পাখি আশ্রয় নেয়, সেগুলোর পরিবেশ নষ্ট হওয়া ও শিকারিদের উৎপাত।

কেইপিজেড এলাকার পাশাপাশি আনোয়ারা-কর্ণফুলী নদীর তীর ও আশপাশের এলাকা এখন পাখিদের অভয়ারণ্য। এসব স্থানে আসা পর্যটকদের ভ্রমণে যোগ করছে বাড়তি বিনোদন।

শতাধিক প্রজাতির পাখি আসলেও এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- কুস্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, পাতারি হাঁস, রাজ হাঁস, নীলশির, কানি বক, ধূসর বক, সাদা বক, জল ময়ূর, ডুবুরি, পানকৌড়ি, গঙ্গা কবুতর, দলপিপি ও রাজসরালি। শীত মৌসুম শেষে অধিকাংশ পাখি ফিরে গেলেও পানকৌড়ি ও কিছু বক স্থায়ীভাবে দেখা যায় বলে জানায় ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।

কেইপিজেডের সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখানে পাখি আসার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শীতের মৌসুমে পাখি বেশি আসে। ইপিজেডের ১৭টি কৃত্রিম লেকে পাখিরা বিচরণ করে বলে জানান তিনি।