বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের বেল সারাদেশে বেশ জনপ্রিয়। তৃষ্ণা নিবারণেও বেলের শরবতের জুড়ি মেলা ভাড়। তবে সম্প্রতি চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাটে ৯ কেজি ওজনের দুটি বেল দেখে অবাক হয়েছেন ক্রেতারা।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা তিনটহরি পাইকারি বাজার থেকে প্রতিটি ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের দুটি বেল কিনে আনেন আলমগীর নামের একজন বিক্রেতা। যা নজর কেড়েছে ক্রেতাদের। এমন বেল পাওয়ার ঘটনাটি অবাক করেছে কৃষিবিদদেরও।
জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে পার্বত্য জেলার তিনটহরি, দিঘীনালা, মারিশা ও রাঙ্গামাটি বাজারে থেকে পাহাড়ি তরকারি, চালসহ ইত্যাদি পণ্য সংগ্রহ করেন বিক্রেতা আলমগীর। পরে তা চট্টগ্রাম শহরে এনে বিক্রি করেন। গেল সপ্তাহে তিনটহরি বাজার থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে বেল দুটি কিনেন। যেগুলোর ওজন প্রায় ৯ কেজি। পরে বহদ্দারহাট হক মার্কেটে বিত্রিু করতে দিলে দুটি ৬০০ টাকা দাম হাঁকা হয় বলে জানান তিনি।
“এই বেল গাছটি লতার মতো হয়, বেলও বেশি ধরে না। সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৮টি বেল হয় গাছে। পাহাড়িরা এই বেলকে আফ্রিকান বেল নামে চিনেন। আমি অনেক বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। কাঁচা একটি বেল পাহাড়ে ৬-১০ টাকা ও পাকা বেল ১২ থেকে ২০-২৫ টাকা দরেও বিক্রি হয়। পাহাড়ি চাষীদের কাছ থেকে একশ বেল এক হাজার থেকে বারশ টাকা কেনা যায়। যা শহরে এনে বিত্রিু করলে বেশি লাভ পাওয়া যায়,” বলেন বিক্রেতা আলমগীর।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির মধ্যে সবচে বেশি বেল উৎপাদন হয় খাগড়াছড়িতে। এ বছরও ব্যাপক হারে ফলন হয়েছে বেলের। তাই তো পার্বত্য জেলার বাজারগুলোতে বেল উঠছে প্রতিদিনই।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষিবিদ মো. গোলাম আজম জানান, “আকারে বড় বা এত বেশি ওজনের বেল পাওয়া যায় এমন কখনো শুনিনি।” এটি আসলে অবাক করা ঘটনা বলেও উল্লেখ করেন তিনি
তিনি বলেন, বেল শুধু সুস্বাদু ফলই নয়, এর ঔষধি গুণও আছে। পাকা বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। কাঁচা বেল কলেরা ও আমাশয় রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছাড়া বেলে প্রচুর পরিমাণ শ্বেতসার, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ আছে বলেও উল্লেখ করেন এই গবেষক।