বাংলাদেশের তালিকায় যুক্ত হলো নতুন প্রাণী

ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বামন চিকা। ছবি: মনিরুল এইচ খান, প্রাণীবিদ, বাংলাদেশ

ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বামন চিকা। এতোদিন প্রাণীবিদদের ধারণা ছিল ভারত ও নেপালে প্রাণীটি দেখা যায়। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশেও বামন চিকার অস্তিত্ব মিলেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বামন চিকার ছবি তুলে প্রাণীটিকে সনাক্ত করেন।

প্রাণীবিদ মনিরুল এইচ খান জানান, দেশের সবচে ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী বামন চিকা। এর আগে বাংলাদেশে এই চিকা কেউ দেখেনি বলে উল্লেখ করেন মনিরুল এইচ খান। তিনি বলেন, গেলো ১৮ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ এলাকার একটি আমবাগানে বামন চিকাটির দেখা পান।

বিশ্বের অন্যতম ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীটির ওজন ১ দশমিক ৮ গ্রাম থেকে ৩ গ্রাম। লেজ ছাড়া দৈর্ঘ্য ৩ থেকে সাড়ে ৫ সেন্টিমিটার। লেজের দৈর্ঘ্য আড়াই থেকে ৩ সেন্টিমিটার। গায়ের রং ধূসর কালো। লেজের রং রুপালি বাদামি। এদের চোখ খুবই ছোট। তবে চোখ দিয়ে প্রাণীটি খুব বেশি দেখতে পায় না।

শরীরের তুলনায় কিছুটা লম্বা নাক ও স্পর্শ দিয়ে আশপাশের পরিস্থিতি টের পায় এরা। ঘ্রাণ ও স্পর্শকে সম্বল করে তারা খাবার খুঁজে খায়। এরা পিঁপড়া ও ইঁদুরের গর্তে লুকিয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়া ঝরা পাতার নিচেও এরা বিশ্রাম নেয়। ইংরেজিতে একে বলে পিগমি হোয়াইট টিথেড শ্রিও। বৈজ্ঞানিক নাম Suncus etruscus। মূলত পিঁপড়া ও ছোট পোকা খেয়ে এরা বাঁচে।

“আমাদের ধারণা ছিল এটি সিলেট অঞ্চলে থাকতে পারে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাওয়া যাবে, তা ভাবিনি। এটিকে পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয়ে থাকে,” বলেন অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান।

ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বামন চিকা। ছবি: মনিরুল এইচ খান, প্রাণীবিদ, বাংলাদেশ

তিনি জানান, বামন চিকা ইঁদুরের মতো ফসল কাটে না, মূলত ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে থাকে প্রাণীটি। প্রকৃতি ও মানুষের জন্য এটি একটি উপকারি প্রাণী বলেও উল্লেখ করেন প্রাণীবিদ মনিরুল এইচ খান।

প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক সংস্থা- আইইউসিএন এর বিপন্ন প্রায় প্রাণীর তালিকায় রয়েছে বামন চিকা। প্রাণীবিদরা জানান, বাংলাদেশে প্রাণীটির টিকে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। তাই বামন চিকা সংরক্ষণে সকলকে সচেতন হতে হবে।