অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অঞ্চলটির পৌর শহর ঘেষা সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় জেলাটিতে ৪১৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে সবচে বেশি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে সুনামগঞ্জে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে বেশিই হচ্ছে। এতে পৌর শহরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। নদীর পানিতে শহরের মাছবাজার, সবজিবাজার, উকিলপাড়া, সাহেববাড়ি ঘাট, বড়পাড়া, কাজীর পয়েন্ট, ওয়েজখালী এলাকা তলিয়ে গেছে। সড়কের কোথাও কোথাও হাঁটুপানি দেখা গেছে। শহরের কালীবাড়ি, মোহাম্মদপুর, ষোলোঘর কলোনি এলাকায়, পূর্ব নতুন পাড়া, রায়পাড়া, সোমপাড়া, হাজিপাড়া, জামতলা এলাকায় জলাবদ্ধতা বেড়েছে। মানুষের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।
ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা বাজার ও আশপাশের এলাকা। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কলাগাঁও ও আশপাশের এলাকার বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে শুক্রবার সকালে হাঁটু সমান পানি ছিল। দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বোগলাবাজার, বাংলাবাজার ও নরসিংহপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জানান, উজান থেকে ঢল নামছে। একই সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে পানি বাড়ছে। ঢলের পানিতে বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভুঁইয়া অবশ্য জানান, সব এলাকায় সুরমা নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করেনি। পৌর শহরে যে পয়োব্যবস্থা আছে, এতে অতি বৃষ্টির পানি ধারণের ক্ষমতা নেই। তাই পানি নামতে দেরি হচ্ছে ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেছেন, বৃষ্টি হচ্ছে, উজান থেকে ঢলও নামছে, যে কারণে পানি বাড়ছে। আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সব উপজেলায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।