চোখ ধাঁধানো রূপে এক সাগর কন্যা

হিমালয় থেকে নেমে আসা তিনটি প্রধান নদী পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্রের পলি থেকে মোহনার বুকে জেগে উঠে দ্বীপটি। যেটির ইতিহাসের সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যও বিচিত্র। বলছি ধান, সুপারি আর ইলিশের জন্য খ্যাত বাংলাদেশের ভোলা জেলার গল্প।

ভোলার চরাঞ্চলের উড়ে বেড়ানো পরিযায়ী পাখি, হরিণের ছুটোছুটে, নদীর বুকে সারি সারি জেলে নৌকা, দল বেঁধে বুনো মহিষের বিচরণ। আর কয়েক শত একর জুড়ে মেনগ্রোভ বনাঞ্চল, কেওড়া বাগান ও সাগর মোহনার সৈকত যেন মন ছুঁয়ে যায়।

আর ভোলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপাসাগরের কোলঘেষে দ্বীপ-উপজেলা ‘মনপুরা’। প্রমত্তা মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ের পলি জমে দ্বীপটির জন্ম। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে মনপুরা ‘সাগর-কন্যা’ হিসেবে পরিচিত।

প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো মনপুরা উপজেলা পরিচিত একটি নাম, যার ইতিহাসও বেশ প্রাচীন। মনপুরায় বসবাসরতদের জীবন যাত্রা কিছুটা ভিন্ন। জেলে, চাষী, দিন মজুর, কৃষক এবং খেয়া পারপারে জীবিকা নির্বাহ করেন বেশিরভাগ বাসিন্দা।

আর ৭০০ বছর আগে পূর্তগীজ জলদস্যূদের আস্তানা ছিল মনপুরা। এর প্রমাণ আজও মিলে, ওই সময়ের লোমস কুকুরে বিচরণ দেখলে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় দ্বীপটির ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এতে সূর্য্যাদয় ও সূর্য্যাস্ত দেখা যায়।

বাহারী প্রজাতির উদ্ভিদ, হরিণ, বানর ও ভাল্লুকসহ বৈচিত্রময় প্রাণী তো রয়েছেই। তবে গহীন জঙ্গলে ভয়াঙ্কর কিছু প্রাণী বিচরণের জনশ্রতি রয়েছে। শীতের চিত্র অবশ্য ভিন্ন। সুদূর সাইরেরিয়া থেকে ছুটে আসা পরিযায়ী পাখিদের আগমনে নতুন রুপ ধারন করে চরগুলো।

মনপুরার রয়েছে ৮-১০টি বিচ্ছিন্ন চর। যেমন- চরতাজাম্মল, চরজামশেদ, কলাতলীরচর, ঢালচর, চরপিয়াল, চরনিজাম, লালচর, বালুয়ারচর, চরগোয়ালিয়া ও সাকুচিয়ারচর। এসব চরাঞ্চলে বনবিভাগের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে সবুজের বিল্পব। চোখ ধাধানো রূপ নিয়েই যেন চরগুলোর জন্ম। যা যেকোন মানুষকে মুগ্ধতার বন্ধনে আটকে দেয়ার আলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে এই সাগর কন্যার।