বাঘেদের বিখ্যাত এক ‘রাণী মা’র গল্প (ভিডিও)

বাঘেদের রাণী মা 'মাছলি'। ছবি: সংগৃহীত

বাঘদের ‘রাণী মা’, ‘রানথাম্বোরের রাণী’ বা ‘লেডি অব দ্যা লেইক এন্ড কোকোডাইল কিলার’ নামে উপাধি ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারটির। মুখের অংশ মাছ আকৃতির হওয়াতে নাম দেয়া হয়েছিল ‘মাছলি’।

ভারতের সবচে জনপ্রিয় ও বিশ্বখ্যাত বাঘিনী ‘মাছলি’। যাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে বহু তথ্যচিত্র।বিশ্বে যত বাঘের ছবি তোলা হয়েছে, এর বেশিরভাগই মাছলির। রাজস্থানের রানথাম্বোর ন্যাশানাল পার্কে কেটেছে মাছলির জীবন। জনপ্রিয় এই বাঘটি ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই ২০ বছর বয়সে মারা যায়। তবে আজো বাঘপ্রেমীদের স্মরণে মাছলি…

মজার বিষয় হচ্ছে, মাছলির নামে আছে ফেসবুক পেজ। ১৯৯৬ সালে জন্ম নেয়ার পর থেকেই নিজ তিন বোনের মধ্যে সবচে প্রভাবশালী শাবক ছিল মাছলি। প্রথম দু’বছরের মধ্যেই শিকার করা শুরু করেছিল এবং নিজের দখলে তার মায়ের এলাকার একটি অংশও।

একবার ১৪ ফুট লম্বা একটি কুমির সঙ্গে লড়াই করে হত্যা করে সাড়া ফেলে এই বাঘিনী। আরেকবার তো রানথাম্বোর জাতীয় উদ্যানের আমাঘাটি বনাঞ্চলে একটি হোটেলে ঢুকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাতও কাটিয়েও আলোচনায় আসে মাছলি। যদিও বাঘেদের রাণীর অবকাশ যাপনে বাঁধা দেয়নি কর্তৃপক্ষও।

প্রভাবশালী এই বাঘিনী ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাত বছরে চার দফায় জন্ম দেয় এগারোটি শাবক। এর সাতটি বাঘিনী ও চারটি বাঘ। মাছলির বংশধরও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০০৪ সালে পার্কটিতে ছিল মাত্র ১৫টি বাঘ, যা ২০১৪ সালে বেড়ে হয় ৫০টি বাঘে। যাদের অর্ধেকেরও বেশি বাঘ মাছলির বংশধর।

২০১৪ সালের একবার মাছলি নিজ বিচরণ এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। পার্কটির ২০০’র বেশি কর্মী প্রায় এক মাস খোঁজাখুজির পর দেখা পায় তার। ওই সময় গভীর জঙ্গলে নিজেই শিকার করে বেচে ছিল মাছলি। মাছলির শিকারে ছিল খুবই দক্ষ এবং শক্তিশালী। নিজ শাবকদের অন্যান্য প্রাণী থেকে রক্ষা করতেও হিংস্র হিসেবে পরিচিতি ছিল মাছলির।

দীর্ঘ ১০ বছর রাজস্থানের রানথাম্বোর ন্যাশনাল পার্কে আসা হাজারো পর্যটকের বিনোদনের আকর্ষণ ছিল মাছলি। আর এতে বছরে পার্কটির আয় হয় এক কোটি ডলারেরও বেশি।

মাছলির মৃত্যার পর পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বয়সের কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় বাঘেদের রাণীর। মাছলির মৃত্যুর খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছিল ভারতীয় গণমাধ্যম। রানথাম্বোরের এই রানির প্রতি ভক্তরাও জানান শেষ ভালোবাসা।