রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বাড়বে মৃত্যু ঝুঁকি!

রাতের শহর। ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়েই বেড়েছে তাপমাত্রা। ইউরোপ থেকে এশিয়া দাবদাহের কারণে কোথাও স্বস্তি নেই যেন। গেল কয়েক দশকের মধ্যে বিভিন্ন দেশে অতীতের রেকর্ড ভেঙেছে তাপমাত্রা। তবে তাপমাত্রা এই বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে পারে মানুষের আয়ুতে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন গবেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএনসি গিলিং স্কুল অফ গ্লোবাল পাবলিক হেলথ এ গবেষণাটি পরিচালনা করে। এ গবেষণায় অংশ নেন চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা। দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এ প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি।

১৯৮০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের ২৮টি শহরে অতিরিক্ত তাপের কারণে মৃত্যুর হার নির্ণয় করা হয়েছে গবেষণায়। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাতের অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ শতাব্দির শেষ নাগাদ মানুষের মৃত্যুহার বাড়তে পারে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।

গবেষকদের দাবি, তাপমাত্রার এ উলম্ফন মানুষের ঘুমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে হৃদরোগ, মানসিক অস্থিরতা-অশান্তিসহ বাড়তে পারে নানা ধরনের রোগও। যা মানুষকে ঠেলে দেবে মৃত্যুর দিকে।

২০৯০ সালের মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের ২৮টি শহরে রাতের তাপমাত্রা গড়ে ৬৮.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে দ্বিগুণ হয়ে ১০৩.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে ওই গবেষণায়।

চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষণাটির গবেষক ড. হাইডং কান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবে যেসব স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, মানুষকে এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে; আর মানিয়ে নিতে বা এ অভিযোজন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে এমন উপায় তৈরি করা।

ড. কান মনে করেন, ভবিষ্যতে দাবদাহের সতর্ক ব্যবস্থা তৈরির সময় রাতের উত্তাপের বিষয়টিও নিতে হবে বিশেষভাবে বিবেচনায়। বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষদের কথা বিবেচনা করতে হবে, যাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের অতিরিক্ত ব্যয় বহনের সক্ষমতা নেই।

গবেষকরা মনে করেন, রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। তবে, গবেষকরা এশিয়া অঞ্চলের বাকি অংশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে এ গবেষণার ফলাফল আপাতত প্রয়োগ না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। কারণ বিশ্বব্যাপী এ নিয়ে এখনো তথ্য বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি।