কোনভাবেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটকানো যাচ্ছে না গরু পাচার। বিএসএফ-বিজিবির চোখ ফাঁকি দিতে পাচারকারীরাও বেছে নিচ্ছে নিত্য-নতুন কৌশল।
সম্প্রতি কলার ভেলায় বেঁধে ভারত থেকে নদী পথে বাংলাদেশে গরু পাচারের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অমানবিকভাবে গরু পাচারের চিত্র দেখে সমালোচনায় মুখোর দু’দেশের সচেতন নাগরিকেরা।
এক সংবাদে পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, দু’দেশের সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর স্রোতে গরু ভাসাতে চাহিদা ও দাম দু’টোই বেড়েছে কলা গাছের।
সংবাদে বলা হয়, গেলো কয়েক বছর ধরে ভারতীয় সীমান্তের রানিনগর, ইসলামপুর, জলঙ্গি এলাকার গ্রামগুলোতে হিড়িক লেগেছে কলাগাছ লাগানোরও। সীমান্তের জব্বর আলি জানান, ‘‘প্রতিটি কলাগাছ তিন থেকে সাড়ে তিনশো টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
আর ক’দিন বাদেই কুরবানীর ঈদ। তাই বাংলাদেশে গরু পাচার হবে কলা গাছে গরুকে বেঁধে। “দাম দিয়েই তো কিনছে পাচারকারীরা, এখন কলার ভেলাই তো ভরসা,’’ বলেন জব্বর আলি।
আনন্দবাজারের তথ্যমতে, কলার ভেলা এখন একমাত্র ভরসা গরু পাচারকারীদের কাছে। কারণ পদ্মা নদীতে পানি বাড়লেই শুরু রমরমা হয় ব্যবসা। গত বছর কুরবানীর আগে একটি কলাগাছ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার দাম পড়ছে তিনশো টাকা।
সংবাদে আরো বলা হয়, কয়েকটি কলাগাছ দিয়ে তৈরি হয় ভেলা, এতে বেঁধে দেয়া হয় গরু। এরপর স্রোতের তোড়ে ভেসে সরাসরি পৌছায় বাংলাদেশে। সীমান্তের এক গরু পাচারকারীর বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, ‘‘কলাগাছ বাঁশের কঞ্চিতে গেথে এতে কয়েকটি গরু আটকে দেয়া হয়। ভেলার উপর ছিটিয়ে দেয়া হয় লতাপাতা।ফলে বোঝার উপায়ই নেই নদীতে ভেসে যাচ্ছে গবাদিপশু।’’
সীমান্তবাসীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঈদের মৌসুমে গবাদিপশুর দাম বেশি থাকে বাংলাদেশে। আর এর নেপথ্যে মদদ রয়েছে কতিপয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং পুলিশেরও।
বিএসএফের এক কর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘‘গভীর রাতে শতাধিক ভেলা একসঙ্গে ভাসিয়ে দেয় পাচারকারীরা। যা একসঙ্গে আটকানোর মতো ব্যবস্থা নেই বিএসএফের।’’
অন্যদিকে জমিতে থাকা পাটের দামও বেড়েছে। পাটের আঁটি বানিয়ে আটকে দেয়া হচ্ছে পশু। এতে বিএসএফের মনে হতে পারে ভেসে যাচ্ছে পাটের জাগ। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে পাল্লা দিতে আধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। কিছুদিন আগে সীমান্তে স্টেইনগানসহ আধুনিক নাইট ভিশন ক্যামেরা উদ্ধার করে বিএসএফ।