বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনে থেকে ধরে আনা একটি বিপন্ন প্রজাতির বন্য ছাগলের ছানা উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। গেল বৃহষ্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) আলিকদমের দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধারের পর ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয় ছানাটি।
বনবিভাগ জানায়, আলীকদম থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মাতামুহুরী রিজার্ভের ইয়ংনং পাড়া থেকে ১১ কেজি ওজনের আনুমানিক দুই মাস বয়সী বন্য ছাগলের ছানাটি মাতামুহুরী রেঞ্জের বন কর্মচারিরা উদ্ধার করে।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকন বলেন, বন্য ছাগলের ছানাটি মায়ের সাথে পাহাড়ি বনে বিচরণ করার সময় শিকারিরা ধরে। তবে মা ছাগলটি পালিয়ে গেলেও ছানাটি যেতে পারেনি। পরে ছানাটিকে উদ্ধার করে বনবিভাগের কর্মীরা।
মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মো. মিনার চৌধুরী এবং ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবারই বন্য ছাগলটি বুঝে পেয়েছেন। এরপর বন্যপ্রাণী চিকিৎসক ডাক্তার মাহফুজুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ছানাটি ‘রেড সেরো’ প্রজাতির বন্য ছাগল। প্রকৃতি ও প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা-আইইউসিএন এই প্রজাতির বন্য ছাগলকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতি হিসেবে উল্লেখ করেছে। মূলত বনাঞ্চল বিনষ্ট ও শিকারের কারণে এখন বন্য ছাগল দেখা যায় না বাংলাদেশে। এই ধরণের বন্য ছাগল ভারত ও মিয়ানমারে দেখা যায়। মূলত পাহাড়ি অঞ্চলেই এদের বিচরণ ক্ষেত্র।
বনবিভাগের লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কায়চার জানান, সম্প্রতি আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের ইয়াংনং ম্রোপাড়ার বাসিন্দারা শিকারে গিয়ে দুর্গম বন থেকে ছানাটি ধরে নিজ লোকালয়ে নিয়ে আসেন। বনকর্মীরা এ খবর পেয়ে বন্য ছাগল ছানাটি উদ্ধার করেন।
প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা মানুষেরা জানান, বাংলাদেশে এখনো বিচরণরত অবস্থায় বন্য ছাগলের ছবি তোলার কোন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।