বিরল তক্ষকের ঠাঁই হলো শ্রীমাই বনে

উদ্ধার হওয়া তক্ষক। ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

পাচারকারীরা বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিরল প্রজাতির দুটি তক্ষক নিয়ে যাচ্ছিল ঢাকার সাভারে। বাংলাদেশের বান্দরবান জেলা থেকে ঢাকার সাভারে নিয়ে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় পাচারকারীদের আটক করে থানা পুলিশ।

২৪ নভেম্বর, রাতে উপজেলার মইজ্জ্যেটেক চেকপোস্টে অভিযান চলাকালে তক্ষকসহ কেরানীগঞ্জের মৃত সিরাজুল হকের পুত্র হাজী মো. মনিরুল হক ও সাভারের আক্কাছ আলী মাস্টারের পুত্র দেলোয়ার হোসেনকে আটক করে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা সুলতানা ভ্রাম্যমাণ আদালতে আটককৃত দু’জনকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

কর্ণফুলী জোনের পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত বলেন, মনিরুল ও দেলোয়ার বিশেষ প্রক্রিয়ায় দুটি তক্ষক নিয়ে ঢাকার পথে যাচ্ছিলো। তল্লাশি করে তক্ষকসহ তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তক্ষক দুটি বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

”তক্ষক প্রতারণামূলক কাজের জন্যও নেয়া হতে পারে বলে ধারণা করছি। এসব অসাধু ব্যক্তির জন্য দেশের জীববৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। প্রাণীগুলো রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আটককৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ব্যবসায়িক লেনদেন চুকাতে বান্দরবান যান মনিরুল হক। ব্যবসার কারণে বেশ কিছু ব্যক্তির কাছে টাকা পেতো। আর যাদের কাছ থেকে টাকা পেতেন তারা এই দুটি তক্ষক বিক্রি করে টাকা নিতে বলেছে বলেও জানায় মনিরুল। পরে তক্ষকগুলো বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়,” যোগ করেন ইয়াছির আরাফাত।

পটিয়া বিট বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তক্ষকের দাম ও তক্ষক দিয়ে তৈরি ওষুধ নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। গুজবে বিশ্বাস করে এক শ্রেণির লোকেরা রাতারাতি ধনী হবার স্বপ্নে তক্ষক শিকারে নেমেছে। তক্ষক গিরগিটি প্রজাতির নিরীহ বন্যপ্রাণী। সাধারণত পুরাতন বাড়ির ইটের দেয়াল, ফাঁক-ফোকড় ও গাছে বাস করে। কীটপতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপের বাচ্চা খায়। আইইউসিএনের লাল তালিকা অনুযায়ী এটি বিপন্ন বন্যপ্রাণী। উদ্ধারকৃত তক্ষক পটিয়া শ্রীমাই রিজার্ভ ফরেস্টে অবমুক্ত করা হবে।