ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্যই স্বপ্ন- আহমেদাবাদ থেকে মুম্বই পর্যন্ত বুলেট গতিতে ছুটবে ট্রেন। এজন্য কাটা যাচ্ছিল প্রায় ৫৪ হাজার ম্যানগ্রোভের অরণ্য। এমন খবর প্রকাশ্যে আসার পরই হইচই পড়েছিল দেশজুড়ে। কারণ ম্যানগ্রোভ বন কেটে বুলেট ট্রেন চায় না দেশটির জনগণ। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যম, সব জায়গাতেই শুরু হয় সমালোচনা। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হলো মোদী সরকার। প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেনের রুট বদলে দেয়া হয়েছে। এতে রক্ষা পাবে বিশাল বনভূমি।
গেলো শনিবার তীব্র চাপের মুখে দেশটির রেল বোর্ড নতুন সিদ্ধান্তের বিষয় জানায়। রেল সূত্র জানায়, বন্যপ্রাণী এবং বন রক্ষার স্বার্থেই বুলেট ট্রেনের প্রস্তাবিত গতিপথে বদল আনার বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমতি নেয় সরকার। বন দফতরের শর্ত অনুযায়ী নকশায় বদল করা হবে। এতে অবশ্য স্টেশনের কাঠামোতে কোনও বদল আসবে না। তবে যে ৫৪ হাজার ম্যানগ্রোভ কেটে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই ক্ষতি অনেকটাই বাঁচানো সম্ভব হবে। নতুন নকশায় প্রায় ২১ হাজার গাছ কম কাটা পড়বে। আগে যেখানে ১২ হেক্টর অরণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতো, এখন ক্ষতি হবে ৩ হেক্টর।
মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার যদিও আগেই প্রস্তাব করেছিল যে প্রতিটি গাছ কাটার পরিবর্তে নতুন করে গাছ লাগানোর ব্যবস্থাও করা হবে। সেই মতো জানানো হয়, প্রতিটি কাটা পড়া ম্যানগ্রোভ পিছু পাঁচটি করে নতুন গাছ লাগানো হবে। এই গাছ বসানোর যাবতীয় খরচ রেলের তরফ থেকেই দেয়া হবে। তবে শুধু অরণ্য তো আর প্রভাবিত হবে না। বহু কৃষিজমি, এমনকি বসতজমির উপরও থাবা বসাচ্ছে সরকার।
মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস বিধায়ক শরদ রানপিসের এক প্রশ্নের জবাবে রাওতে জানিয়েছেন, বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য রাজ্যের মোট ১ হাজার ৩৭৯ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব রয়েছে। যার মধ্যে ২৭৫.৬৫ হেক্টর ব্যক্তিগত জমি রয়েছে। সরকার এই জমি অধিগ্রহণ করলে স্থানীয় বাসিন্দারা যে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও সরকার যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তবে কেবল জমির মূল্য দিলেই কী সব সমস্যা মিটবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।