আজ ৪ জানুয়ারি (শনিবার) চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘প্রকৃতি মেলা ২০২০’। এ বছর ‘প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক ২০১৯’ পাবেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি এ. টেইলর। মেলার দিন সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে পদক তুলে দেয়া হবে।
২০০৮ সালের পরিকল্পনা অনুসারে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের বহুমাত্রিক পরিকল্পনা নিয়ে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরের ৩ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। ২০১০ সালের ১ আগস্ট থেকে শুরু হয় ‘প্রকৃতি ও জীবন’ অনুষ্ঠানের পথচলা।
২০১১ সাল থেকে প্রকৃতি সংরক্ষণের অনন্য উদ্যোগ মূল্যায়ন করতে ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক’ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এখন পর্যন্ত এই পুরস্কার পেয়েছেন দ্বিজেন শর্মা, ড. রেজা খান, ইনাম আল হক, ড. আইনুন নিশাত, অধ্যাপক ড. নূর জাহান সরকার, ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এবং ড. মিহির কান্তি মজুমদার।
ভ্যালেরি এ. টেইলর পরিচিতি
পক্ষাঘাতগ্রস্তদের সেবা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নিবেদিন প্রাণ ভ্যালেরি এ. টেইলর। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণেও অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ১৯৪৪ সালে ইংল্যান্ডের কেন্ট শহরে টেইলর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে একজন শিক্ষানবীশ ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে তিনি প্রথম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডে ফিরে যান। কিন্তু মাতৃভূমির বন্ধন তাকে আটকে রাখতে পারেনি। ফিরে আসেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে।
মাত্র চারজন রোগী নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দুটি পরিত্যক্ত গোডাউন সংস্কার করে শুরু করেন চিকিৎসা সেবা। অসংখ্য রোগী আর সেবার সুযোগ কম থাকায় ১৯৭৯ সালে ক্ষুদ্র পরিসরে সিআরপি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯০ সালে ঢাকার অদূরে সাভারে সিআরপির স্থায়ী কেন্দ্র স্থাপিত হয়। প্রতিবন্ধীদের সেবা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সিআরপির কর্মকাণ্ড বর্তমানে দেশের ১১৫টি উপজেলায় বিস্তৃত।
স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি ভ্যালেরি এ. টেইলর প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে সিআরপি চত্বর করে তুলেছেন মনোলোভা সবুজ। উইলিয়াম ও মেরী টেইলর স্কুলে পরিবেশ শিক্ষার প্রসারে শিশুদের পরিবেশবান্ধব খেলনা সরবরাহ করছেন। বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শিশুদের জন্য পরিবেশ শিক্ষাসহায়ক পাঠ্য-পুস্তক বিতরণ করছেন।
দেশজুড়ে তার প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশ সংরক্ষণে নার্সারির মাধ্যমে গাছের চারা উৎপাদন, বিনামূল্যে বিতরণসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ অভিযানে অংশগ্রহণ করছে। পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশবান্ধব হস্তশিল্প, হুইলচেয়ার ও শিশুদের জন্য খেলনা তৈরি হচ্ছে। সিআরপিতে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করা হচ্ছে। বাগান করা, মাশরুম চাষসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ পরিচালিত হচ্ছে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের আত্মনির্ভরশীল হতে।