
২০১৯ সালের প্রাণি কল্যাণ বিল, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল বিলসহ তিন বিলে সম্প্রতি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এই সম্মতির ফলে আইনগুলো কার্যকর হয়ে গেল। বৃহষ্পতিবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি একাদশ জাতীয় সংসদের ৩য় অধিবেশনে জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত তিনটি বিল প্রাণিকল্যাণ বিল, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল বিল, আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) বিল ২০১৯-এ ১০ জুলাই ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।”
প্রাণি কল্যাণ বিল-২০১৯ বিলে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ, সদয় আচরণ ও দায়িত্বশীল প্রতিপালনের মাধ্যমে প্রাণি কল্যাণ নিশ্চিত করতে বিলে যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ থেকে বিরত রাখার সুনির্দিষ্ট বিধান রাখা হয়েছে। আইনের বিধান লংঘনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সবোর্চ্চ দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ডের বিধান করা হয়েছে। এছাড়া সর্বনিম্ন ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা দশ হাজার টাকা অর্থদন্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
আইনে প্রাণিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো, অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রহার, প্রয়োজনীয় খাদ্য না দেয়া, বসবাসের যথাযথ ব্যবস্থা না করা, উত্যক্ত করা, ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ, আহত প্রাণির চিকিৎসা না করা, অনুমোদন ছাড়া বিনোদন বা খেলাধূলায় ব্যবহারকে প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অবশ্য প্রয়োজনে উল্লেখিত কোনো কোনো কর্মকান্ডকে নিষ্ঠুরতা থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিধানও রাখা হয়েছে।
উল্লেখিত বিলগুলোর মধ্যে প্রাণি কল্যাণ বিল-২০১৯ বাংলাদেশের প্রাণী অধিকার কর্মীদের কাছে কাঙ্খিত ছিল। এই আইন পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রাণী অধিকার ও সংরক্ষণে নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন প্রাণীপ্রেমীরা।
বৃহস্পতিবার আইনে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জ্ঞাপনের বিষয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকাভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ সংস্থা পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেরার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রাকিবুল হক এমিল বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাণিকল্যান বিষয়ক বোর্ড গঠন করে আইনের আওতায় আনা বিধিমালাগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশে জেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে- মাঠ পর্যায়ে খামারিদের সচেতন করতে।”
তিনি বলেন, একই সাথে দেশের পথপ্রাণি কুকুর-বিড়াল থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রাণিদের প্রতি অমানবিক আচরণ রোধে প্রাণি ও পরিবেশ কর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেকোন ধরণের সহিংসতার বিরুদ্ধে মানবিক মূল্যবোধ তৈরিতে উদ্যোগ নিতে হবে।
“ছোট অপরাধ একজন ব্যক্তিকে বড় অপরাধের সাহস যোগায়, এটি সমাজের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে। নতুন আইন যেন পুরনো আইনের মতই বাক্সবন্দি না থাকে” উল্লেখ করেন এমিল।