
বাংলাদেশে পুলিশ সদস্যের বিচক্ষণতায় ঘুড়ির সুতোয় আটকে পড়া একটি শালিক পাখি জীবন ফিরে পেয়েছে। ১৮ জুন, বৃহষ্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকার মার্কিন দূতাবাসের সামনের আটকে পড়া পাখিটি উদ্ধার করে বনবিভাগ।
বনপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির উদ্দির আকন বলেন, ”ঘুড়ির পতিত সুতায় পা আটকে সকাল থেকে ছটফট করছিল একটি শালিক পাখি। অনেক পথিকই হৃদয় বিদারক দৃশ্যটি দেখে আক্ষেপ করছেন। আসলে করারও তেমন কিছু নাই। কারণ পাখিটি একটা নিম গাছের মগডালে।”
”এরপর গাছও ভিজা, পিচ্ছিল। নিরুপায় হয়ে একজন পুলিশ সদস্য ফোন করেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের হটলাইন নাম্বারে। সহযোগিতা নেয়া হয় ঢাকার বন্যপ্রাণী বিভাগের। পরে মুক্তির স্বাদ পায় পাখিটি। ফিরে যায় আপন নীড়ে,” বলেন জহির উদ্দিন আকন।
জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওই সদস্যের নাম কনস্টেবল মো. জাকারিয়া হোসেন। তিনি গুলশান ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি ডিভিশনে নিয়োজিত আছেন। শালিক পাখি উদ্ধারে এগিয়ে আসার মানবিক বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ পুলিশের ওই সদস্য ব্যাপক প্রশংসিত হন।
পুলিশ সদস্য জাকারিয়া হোসেন বেঙ্গল ডিসকাভার-কে বলেন, ”পাখিটিকে দুই ঘন্টা ধরে দেখছিলাম গাছে উঁচু ডালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। নিজে অনেক চেষ্টা করার পর পাখিটি বাঁচানোর জন্য আমি পুলিশ কন্ট্রোল রুম, ৯৯৯, ফায়ার সার্ভিসসহ বনবিভাগে ফোন করেছি। পরে বনবিভাগ থেকে উদ্ধারে যোগাযোগ করে। পাখিকে গাছ থেকে নামাতে রাসেল নামের এক ভাই সহযোগিতা করেন।”
”পরিবেশের জন্য পাখি সংরক্ষণ করা জরুরি। খাওয়ার উদ্দেশ্যে অনেকে পাখি শিকার করে, এটি করা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে এবং সব সময়ের জন্য এগুলো সংরক্ষণ করা দরকার,” উল্লেখ করেন পুলিশ সদস্য জাকারিয়া হোসেন।
বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী শাহানুল করিম চপল কমেন্টে লিখেন, ”যারা আমাদের দেশের পুলিশদের সম্পর্কে শুধুই নেগেটিভ ধারণা করেন তাদের দেখা উচিত বহু ভালো মানুষও আছে এই পুলিশ বাহিনীতে।”
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকর্মী আব্দুর রাজ্জাক নাসিম লিখেন, ”আমি খুবই মুগ্ধ! পুলিশ কর্মকর্তা মহোদয়ের প্রতি কৃতঙ্গতা প্রকাশ করছি। যার কল্যাণে বিপদগ্রস্ত পাখিটি মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। ধন্যবাদ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সংশ্লিষ্টদের।আসুন আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়বদ্ধতায় ভালো কাজ করি। এতে দেশ ও প্রকৃতি সমৃদ্ধ হবে, লাভবান হবো আমরাও।”