মানুষের অক্সিজেন গ্রহণের স্বাভাবিক কার্যক্রম সম্ভব হত না যদি পৃথিবীর ৭০ ভাগ অংশ জুড়ে সাগর-মহাসাগর না থাকতো। তাই তো বিশ্বের সমস্ত সাগর ও মহাসাগরগুলোকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। যা প্রাণীজগতের বেঁচে থাকার অন্যতম লাইফ লাইন।
মানুষের শরীরের ফুসফুস যেমন শ্বাস ক্রিয়ায় রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তেমনি পৃথিবীর ফুসফুস অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিকূলকে টিকিয়ে রেখেছে। তবে বিনিময়ে মানুষ সমুদ্রের পরিবেশকে দিনদিন দূষিত করছে। যা ধীরে ধীরে পৃথিবীতে মানুষসহ প্রাণীজগদের অস্তিত্ব সংকটে ফেলছে।
তবে পৃথিবীকে রক্ষার তাগিদে প্রতিবছর ৮ জুন, বিশ্ব মহাসাগর বা সমুদ্র দিবস পালন করে জাতিসংঘ। এবার ২০২০ সালের প্রতিপাদ্য ’Innovation for a Sustainable Ocean’। সাগর ও মহাসাগরগুলোর গুরুত্ব মানুষকে বোঝানো ও সচেতন করতে এ দিনটিকে বেছে নো হয়েছে।
সর্বপ্রথম ১৯৯২ সালে কানাডা ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরোতে দিবসটি সম্পর্কে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৩তম অধিবেশনে ২০০৮ সালের ৫ ডিসেম্বর গৃহীত হয় প্রস্তাবটি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ৮ জুন থেকে বিশ্বব্যাপী মহাসাগর দিবস পালিত হচ্ছে।
করুণাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সমুদ্র ও মানুষের সম্পর্ক। মানুষের দৌরাত্ম্যে সমুদ্র-মহাসাগরের স্বাস্থ্য বর্তমানে ভয়ংকর পরিণতির দিকে এগুচ্ছে। এতে মানব সভ্যতাও বির্পযয়ের মুখে।
বাংলাদেশে সাগর গবেষণায় যুক্ত মেরিন এক্সপ্লোরার এস এম আতিক রহমান বলেন, সমুদ্র আমাদের অক্সিজেন জোগায়, খাবারের ব্যবস্থা করে, করে কর্মের ব্যবস্থা। যদি সমুদ্রের অবস্থার কথা বলতে হয় তবে তা এখন মানবসৃষ্ট দূষিত আর্বজনার ভাগাড়। সাগরের প্রাণ-বৈচিত্র সংরক্ষণে অনেক বেশি গবেষণার দরকার।
বিজ্ঞানীরা বলেন, বিশ্বের যত প্লাস্টিক আর্বজনা রয়েছে তার প্রায় ১০ শতাংশ এসে পড়ে সমুদ্রগর্ভে। জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সমুদ্রের প্রতি বর্গ মাইলে প্রায় ৫০ হাজার প্লাস্টিকের বোতল ভাসতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি রয়েছে তেল ও রাসায়নিকসহ বর্জ্য পদার্থ।
সমুদ্র উপকূলের উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগত রয়েছে বিশাল বির্পযয়ের মুখে। তিন-চতুর্থাংশ জলের সমুদ্র মহাসমুদ্র রক্ষার্থে আর্বজনা ও দূষন বন্ধ করা সম্ভব না হলে শিগগিরই মানুষকে করোনা ভাইরাসের চেয়েও আরো দু:সংবাদের মুখোমুখি হতে হবে।