গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে খেলা করছে সিংহ শাবক। গেলো আড়াই মাস আগে জন্ম নিলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে জনম্মুখে আনা হয় গতকাল শনিবার। এদিন দেখা গেলো দুরন্তপনায় মশগুল ছোট্ট বনের বাজা।
আজ রোববার (২১ জুলাই) সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, গেলো ৪ মে সিংহের খাবারের ঘরে শাবকটির জন্ম হয়। এরপর এটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়। শাবকটি এখন বেশ সুস্থ আছে এবং ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে।
“সাফারি পার্কের সিংহ পরিবারের নতুন এই অতিথি পুরুষ সিংহ। শাবকটি আফ্রিকার জাতের,” উল্লেখ করেন তবিবুর রহমান। তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে যেকোন প্রাণীর শাবক জন্মের বিষয়টি একটু দেরিতেই গণমাধ্যমে জানানো হয়। আর সিংহের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যের কারণে জন্মের পর শাবকটিকে লুকিয়ে রাখে।
সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, এ নিয়ে সাফারি পার্কে সিংহের সংখ্যা হলো ১৫টি। এর আগেও পার্কে সিংহ জন্ম নেয়। এর মধ্যে ৮টি মাদী ও ৭টি পুরুষ। এখন পর্যন্ত সাফারী পার্কে জন্ম নিয়েছে ৯টি সিংহ শাবক। তবে কয়েক ধাপে পার্ক থেকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় সরবরাহ করা হয়েছে চারটি সিংহ।
শাবকটি এখনো আলাদাভাবে খাবার খেতে শিখেনি, তবে মাকে দেয়া মাংসে জিভ দিয়ে চেটে দেখার চেষ্টা করে। “শাবকটি শুধু মায়ের দুধ পান করছে” জানান তবিবুর রহমান।
তবিবুর জানান, পার্কে সিংহের জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সিংহের থাকার ঘরও নতুনভাবে বন্দোবস্ত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত জন্মের পর পর সিংহ শাবকদের চোখ ফুটেনা, এজন্য কমপক্ষে ৩-১১দিন সময় লেগে যায়। জন্মের সময় এদের ওজন ১-৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ সময় বাঘিনী বাচ্চাকে নিয়ে জঙ্গলের আড়ালে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে এবং সেখানে অন্যসঙ্গীদের পর্যন্ত যেতে দেয় না। শাবকরা ১০-১৫ দিনে হাঁটতে শেখে। ৪-৫ মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশপাশি অন্য খাবার খাওয়ানো শেখানো হয়। এরা প্রায় বছর দুয়েক পর্যন্ত মায়ের কাছাকাছি থাকে। দেড় থেকে দুই বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয় সিংহ।
প্রাণী বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সিংহের মূলত দুটি উপপ্রজাতি বর্তমানে টিকে আছে। একটি হল আফ্রিকান সিংহ অপরটি হল এশীয় সিংহ। আফ্রিকান সিংহ আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে পাওয়া গেলেও অল্প সংখ্যক ভারতীয় সিংহ শুধুমাত্র ভারতের গির অভয়ারণ্যে পাওয়া যায়।