
বাংলাদেশে মিঠা পানির একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে অবশেষে ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। গতকাল ২১ মে, বৃহস্পতিবার রাতে মা মাছ নমুনা ডিম দিলেও আজ শুক্রবার সকাল থেকে পুরোদমে ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। প্রায় তিন শতাধিক সংগ্রহকারী নৌকা নিয়ে নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, আম্ফানের পর বৃষ্টি শুরু হলে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হালদা নদীর জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে, একইসঙ্গে নামে উজানের ঢল। এতে রাতের দিকে হালদা নদীতে মা-মাছ নমুনা ছাড়ে। সকালে জোয়ার হলে মা-মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়তে শুরু করে।
ডিম ছাড়ার খবর পেয়ে সংগ্রহকারীরা নৌকা, জালসহ ডিম ধরার সরঞ্জাম নিয়ে হালদায় নেমে পড়েন। আইডিএফ’র জুনিয়র মৎস্য মো. রাশেদ জানান, নদীতে এখন ডিম সংগ্রহের উৎসব চলছে।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, মুষলধারে বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন এবং পাহাড়ি ঢল বা অমবশ্যা ও পূর্ণিমার তিথিতে হালদায় মা-মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম পরিস্থিতিতে ডিম ছাড়লো হালদার মা-মাছ।
মূলত হালদার পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, বিনাজুরী, কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, খলিফার ঘোনা, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম পাওয়া যায় বেশি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা-মাছ নমুনা ডিম দেয় বৃহস্পতিবার। শুক্রবার সকাল থেকে পুরোদমে ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মা-মাছ। যা হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী বা সংশ্লিদের জন্য সুখের খবর।
হালদা নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১০৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। প্রতিবছর হালদা নদীতে একটি বিশেষ মুহুর্তে ও বিশেষ পরিবেশে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ও কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে।