খাবার সংকটে দর্শণার্থীদের দেখলেই হাত বাড়িয়ে আকুতি জানাচ্ছে বন্দি থাকা বানরগুলো। সেইসঙ্গে নানা রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার সার্কিট হাউজ সংলগ্ন মিনি চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা নিয়ে উঠেছে এমনই নানান অভিযোগ।
বৃহষ্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিড়িয়াখানাটির অনিয়মের ছবি পোস্ট করেন বাংলাদেশে প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা বোরহান বিশ্বাস রোমন।
পোস্টে বোরহান বিশ্বাস রোমন খাবারের অভাবে থাকা চিড়িয়াখানাটির একটি মা বানরের কঙ্কালসার ছবি দিয়ে লিখেন, “প্রাণীর দাবি, প্রাণের আকুতি। এদের বাঁচতে দাও, এদের বাঁচাও।”
অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে তিনি লিখেন, “মা বানরের সবকটি হাড় বেরিয়ে এসেছে। শরীরে একটুও মাংস নেই, স্তন শুকিয়ে চিমসে গেছে। মায়ের পেটে খাবার নেই বাচ্চাটাও অভুক্ত। খাঁচার সবকটা বানরের একি অবস্থা। কঙ্কালসার শরীরে আবার চর্মরোগ নিয়ে ধুকছে প্রাণীগুলো।”
“লজ্জাবতি বানর এক ফুট খাঁচায় বন্দী খাবার নেই, দুই এক দিনে মরে বেঁচে যাবে হয়তো” উল্লেখ করেন এই প্রাণী সংরক্ষণকর্মী।
লিখেন, “ভালুক দুটোর অবস্থা করুণ, ধনেশ পাখির খাঁচার কাছে যেতেই খাঁচার ফাক দিয়ে ঠোঁট এগিয়ে দিলো খাবারের আশায়, ধুকছে জীবন নিয়েও। হরিণকে খেতে দেয়া ঘাসটুকুর ভেতরে ঘুরছে টার্কি মুরগি।”
“মদনটাক এর পাখা মেলার সুযোগ নেই। বক খড়কুটো না পেয়ে মাটিতে ডিম পেড়েছে, ডিমগুলো গড়াগড়ি খাচ্ছে। দুর্গন্ধের চোটে আর প্রাণীগুলোর কষ্টে বেশি খন থাকতে পারিনি, বেরিয়ে এসেছি,” লিখেন বোরহান।
তিনি প্রশ্ন করেন, “আমি তো পালিয়ে বাঁচলাম, কিন্তু তাদের কি হবে যারা বন্দী।”
ফেসবুকে অনেকেই প্রশ্ন করেন, “চিড়িয়াখানায় বন্দি বন্যপ্রাণীরা অবহেলায় যদি বন্দি জীবনটা উপভোগ্যই করতে না পারে, তবে অন্যের বিনোদনের খোরাক হবে কি করে।”
পোস্টিটর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনা। চিড়িয়াখানার প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে দাবি উঠেছে অন্তত খাবার ও চিকিৎসার প্রদানের।
বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী বিষয়ক সাংবাদিক হোসেন সোহেল এ বিষয়ে পোস্ট করেন, “উত্তর চাই সবার কাছে। প্রাণের চেয়েও ভালোবাসার নিজের শিশুটিকে বছরের পর বছর এমনকি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত খাঁচায় আটকে রাখতে পারবেন, হায়রে চিড়িয়াখানা?”
এদিকে এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা রাজীব রাশেদুল কবীর পোস্টের মন্তব্যে বলেন, “এর আগেও এটা নিয়ে কথা বলেছি, এবার সিরিয়াসলি নামতে হবে।”