বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় পানের ছড়া এলাকায় বিরল কাঠ ময়ূর গুলি করে হত্যা অভিযুক্ত যুবককে দ্রুত বিচার আইনে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। ৭ জুলাই, মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি বেঙ্গল ডিসকাভার-কে নিশ্চিত করেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির।
পাশাপাশি একই জেলার সোনা পাড়ায় নয় ফুট লম্বা কিং কোবরা হত্যা করায় অভিযুক্ত ব্যক্তি নুরুল আবসারকে আটক ও তার বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দাখিল করা হয়েছে বলেও জানান ওই বিভাগীয় বনকর্মকর্তা।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ জানায়, প্রাণ-প্রকৃতি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম বেঙ্গল ডিসকাভারে ৪ জুলাই মেটে কাঠ ময়ূর ও নয় ফুট লম্বা কিং কোববা সাপ হত্যার খবরের সূত্র ধরে ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেন বন কর্মকর্তারা। পরে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়।
”কাঠ ময়ূর গুলি করে হত্যা ও খাওয়ার অভিযোগে ৬ জুলাই অভিযুক্ত যুবক বাচিং রাখাইন ওরফে বুবুকে আটকে অভিযান চালায় বনবিভাগ। কিন্তু সে পালিয়ে যায়। তবে আজ (৭ জুলাই) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ এক অভিযানে আটক করা হয় তাকে। পরে দুপুরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা অভিযুক্ত যুবককে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদল্ড ও অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন,” উল্লেখ করেন বিভাগীয় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির।
”পাশাপাশি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার সোনায় ছড়ি এলাকায় কিং কোবরা হত্যাকারী নুরুল আবসারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সরকারি বনভূমি থেকে কিং কোবরা সাপ ধরা ও হত্যার ঘটনায় সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে ১৯২৭ সালের বন আইনে মামলা দাখিল করা হয়েছে,” জানান হুমায়ূন কবির।
তিনি বলেন, ”কাঠ ময়ূর এ দেশে বিরল প্রজাতির পাখি। তাই এই পাখি হত্যাকারীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনাই ছিল বনবিভাগ মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি কিং কোবরা সাপ হত্যার শাস্তিও যাতে দ্রুত নিশ্চিত করা যায়, সে পথেই এগুচ্ছে বনবিভাগ।”
সম্প্রতি কক্সবাজার জেলায় বন্যপ্রাণী বিষয়ক অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ায় ৭ জুলাই থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। চারটি উপজেলায় তিনদিন ধরে চলবে এ প্রচারণা। এতে জনসাধারণকে পাখি ও বন্যপ্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাবে বনবিভাগ।
কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন সেইভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আ.ন.ম মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ বলেন, “কক্সবাজারে প্রথম ময়ূর হত্যায় বিচার এবং সাপ হত্যাকারীর বিরুদ্ধেও মামলা করলো বনবিভাগ। যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলে মনে করছি।”